অর্থ নিয়ে হ্যাকিং মামলার রফাদফা করেছেন প্রিন্স উইলিয়াম, দাবি হ্যারির
মিডিয়া টাইকুন রুপার্ট মারডকের মালিকানাধীন যুক্তরাজ্যের একটি গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে মোবাইল হ্যাকিংয়ের অভিযোগ তুলেছিল ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্য প্রিন্স হ্যারি। সেই ঘটনায় হয়েছিল মামলাও। ওই মামলায় হ্যারির দাবি—ব্রিটিশ পরিবারের আরেক রাজপুত্র প্রিন্স উইলিয়ামের সহযোগিতায় বিশাল পরিমাণের অর্থের বিনিময়ে গণমাধ্যমটির সঙ্গে রফাদফা করা হয়েছিল। বাকিংহ্যাম প্যালেসেই এই রফাদফা হয়। আদালতের নথিতে ডিউক অব সাসেক্স প্রিন্স হ্যারি এমনটি দাবি করেছেন বলে মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানা যায়।
বর্তমান ব্রিটিশ রাজা চার্লসের কনিষ্ঠ সন্তান হ্যারি। রুপার্ট মারডকের নিউজ করপোরেশনের ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড পত্রিকা দ্য সান। এই পত্রিকাটির প্রকাশক নিউজ গ্রুপ নিউজপেপার (এনজিএন) বিরুদ্ধে লন্ডনের উচ্চ আদালতে একাধিক মামলা করেছেন ডিউক অব সাসেক্স। বেআইনি কাজ করার অভিযোগে ১৯৯০ এর দশক থেকে শুরু করে ২০১৬ সাল পর্যন্ত এনজিএনের বিরুদ্ধে মামলাগুলো করেন এই রাজপুত্র।
হাজারের বেশি ফোন হ্যাকিংয়ের অভিযোগ মীমাংসার জন্য লাখ লাখ পাউন্ড খরচ করেছে এনজিএন। চলতি সপ্তাহে হ্যারি ও বিট্রিশ অভিনেতা হিউ গ্রান্টের ফোন হ্যাকিংয়ের দাবি থেকে রেহাই পেতে চেষ্টা করেছে। এনজিএন বলছে, হ্যাকিংয়ের বিষয়টি নিয়ে অভিযোগকারীদের অনেক আগে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল।
৩১ পৃষ্ঠার সাক্ষীর নথির বরাতে রয়টার্স বলে, নিজেদের ভাবমূর্তি ও সম্মান অক্ষুণ্ণ রক্ষার্থে রাজ পরিবার ও এনজিএনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার মধ্যে একটি গোপন চুক্তি হয়, যার বিরোধীতা করেছিলেন প্রিন্স হ্যারি। বাকিংহাম প্যালেসে এই গোপন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
সাক্ষ্য নথিতে হ্যারি বলেছেন, মারডক গ্রুপের সঙ্গে লড়াই করার জন্য প্রয়াত রানি এলিজাবেথের সমর্থন থাকা সত্ত্বেও তিনি তা করতে পারেননি। চুক্তির পর এনজিএন গ্রুপের ক্ষমা চাওয়ার চেষ্টা বন্ধ হয়ে যায়।
ডিউক অব সাসেক্স বলেন, ‘২০২০ সালে বিরাট পরিমাণের অর্থের বিনিময়ে উইলিয়াম ও এনজিএনের মধ্যে চুক্তিটি হয়। বিষয়টি কাওকে জানানোও হয়নি।’
বিস্তীর্ণ ফোন হ্যাকিংয়ের জন্য ২০১২ সালে মারডকের মালিকানাধীন ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড নিউজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড দুঃখ প্রকাশ করে। এই হ্যাকিং বন্ধ করতে এক প্রকার বাধ্য হয়েছিলেন মিডিয়া টাইকুন। যদিও দ্য সান পত্রিকা এখনও হ্যাকিংয়ের অভিযোগ অস্বীকার করছে।
২০১৪ সালে হ্যাকিংয়ের জন্য বিশ্বের অনেক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা আদালতে ওঠে। হ্যাকিংয়ের অভিযোগ স্বীকার করে নিউজ অব দ্য ওয়ার্ল্ডের রয়েল সম্পাদক ক্লিভ গডম্যান। তিনি বলেন, ২০০০ দশকে তিনি উইলিয়াম, তাঁর স্ত্রী কেট ও হ্যারির ভয়েস মেইল হ্যাক করেছিল। কেটের মোবাইলফোন ১৫৫ বার, উইলিয়ামের ৩৫ বার ও হ্যারিরটা ৯ বার হ্যাক করা হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে উইলিয়ামের কার্যালয় কোনো মন্তব্য করেনি। মামলাটি বিচারাধীন, তাই কোনো মন্তব্য করবেন না বলে জানিয়েছেন তারা।