অস্ট্রেলিয়ায় চাকরি আছে, কর্মী সংকট
কোভিডের বিধিনিষেধ শেষে পার্টির জন্য প্রস্তুত অস্ট্রেলিয়া৷ খুলছে রেস্তোরাঁ, স্টেডিয়ামসহ বিনোদন কেন্দ্রগুলো৷ কিন্তু, সেগুলো পুরোপুরি চালু করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন উদ্যোক্তা ও ব্যবস্থাপকেরা৷ দেখা দিয়েছে প্রয়োজনীয় জনবলের অভাব৷ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
করোনার সময় বিপুল মৌসুমি কর্মী আর বিদেশি শিক্ষার্থী অস্ট্রেলিয়া ছেড়েছেন৷ সীমান্তে কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপের কারণে নতুন শিক্ষার্থী বা কর্মীরা এ সময়ের মধ্যে আসতে পারেননি৷ যাঁরা চলে গেছেন, তাঁদের অনেকেও ফিরে আসেননি৷ যে কারণে মৌসুমি কর্মী সংকটে পড়েছে অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন ব্যবসা খাত৷ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পুরোপুরি চালু হলেও প্রয়োজনীয় কর্মী ছাড়াই কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হচ্ছে অনেককে৷
আতিথেয়তা-নির্ভর খাতের জন্য কর্মী ভাড়া করে এমন একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক রোনডা এভারিংহাম পরিস্থিতি বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, ‘লকডাউনের আগে কোনো চাকরির বিজ্ঞপ্তি দিলে কয়েকশ আবেদন জমা পড়ত৷ এখন যদি পাঁচ জন পাওয়া যায় তাহলেই আপনি সৌভাগ্যবান৷ এর মধ্যে তিন জন পাবেন উপযুক্ত৷ কিন্তু, যতক্ষণে আপনি তাদের ডাকবেন, ততক্ষণে দেখা যাবে তারা অন্য কোনো চাকরি পেয়ে গেছে৷’
সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে অস্ট্রেলিয়ার সিডনির দুটি বড় শহর এবং মেলবোর্নের সেবা-নির্ভর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো৷ গত ১১ অক্টোবর সিডনি এবং গত সপ্তাহে মেলবোর্নে কোভিডের বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে৷
কর্মী সংকটের চিত্র ধরা পড়েছে অস্ট্রেলিয়ার সরকারি পরিসংখ্যানেও৷ ‘নন-রেসিডেন্ট’ কাজের ভিসায় অস্ট্রেলিয়ায় আসা মানুষের সংখ্যা ২০২০ সালের শুরুর তুলনায় চলতি বছরের জুন প্রান্তিকে দুই-তৃতীয়াংশ কম ছিল৷ সেইসঙ্গে দেশটিতে বিদেশি শিক্ষার্থীদের সংখ্যা করোনার আগের সময়ের চেয়ে তিন লাখ কমে গেছে৷
অস্ট্রেলিয়ার ২২ লাখ অনিয়মিত কর্মীর এক-চতুর্থাংশই থাকেন সিডনিতে৷ চার মাসের লকডাউন শেষে শহরটিতে স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরুর অনুমতি মিলেছে৷ গত ২৫ অক্টোবর সাড়ে ২২ হাজার দর্শক নিয়ে ফুটবল ম্যাচ আয়োজিত হয়। এজন্য ৭৩০ জন রাঁধুনি, পরিচ্ছন্নতা বা নিরাপত্তাকর্মী প্রয়োজন পড়ে৷ একই সময় অন্য কোনো বড় আয়োজন না থাকায় এ লোকবল যোগাড় করতে পেরেছেন আয়োজকেরা৷ কিন্তু, একটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি জানান, আতিথেয়তা ব্যবসায় প্রত্যেকেই এখন কর্মী সংকটে পড়েছেন৷
এমন অবস্থায় অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্য সরকার এবার বেশ সংখ্যক বিদেশি শিক্ষার্থী নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে৷ সেইসঙ্গে কর্মী চাহিদা মেটাতে এক বছরে চার লাখ অভিবাসী নিতে চান তারা, যা কোভিড-পূর্ববর্তী সময়ের দ্বিগুণ৷ কিন্তু সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী, এ মুহূর্তে দেশটির নাগরিক, বাসিন্দা এবং তাদের পরিবারের সদস্যেরাই শুধু অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশের অনুমতি পাচ্ছে৷