আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত নিষিদ্ধ করতে চান পুতিন মিত্ররা
রাশিয়াতে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতকে (আইসিসি) নিষিদ্ধ করতে চাইছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মিত্ররা। দেশটির পার্লামেন্টের স্পিকার আজ শনিবার (২৫ মার্চ) আইসিসির কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব করেছেন। যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার পর আইসিসির বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপ নিতে চলেছে রাশিয়া। খবর রয়টার্সের।
রুশ পার্লামেন্ট স্টেট দুমার স্পিকার ও পুতিনের মিত্র ভায়াচেসল্যাভ ভোলোদিন বলেছেন, ‘আইসিসির কার্যকলাপ নিষিদ্ধের জন্য রাশিয়ার আইন সংশোধন করা উচিত। আইসিসিকে সমর্থন ও সহায়তাকারীকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।’
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টেলিগ্রামে এক পোস্টে ভোলোদিন লেখেন, ‘আমাদের ভূখণ্ডে আইসিসির কার্যকলাপ নিষিদ্ধের জন্য আমাদের আইন সংশোধন করা প্রয়োজন। যুক্তরাষ্ট্র তার নাগরিকদের হেগের আদালতে বিচার না করার জন্য আইন প্রণয়ন করেছিল। রাশিয়াকে সেই কাজ করতে হবে। রাশিয়ার অভ্যন্তরে আইসিসিকে সহায়তা বা সমর্থনকারীকে আইনের অধীনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে হবে।’
চলতি মাসের শুরুর দিকে পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে হেগের আদালত। ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে যুদ্ধাপরাধ ও ইউক্রেনীয় শিশুদের জোর করে রাশিয়ায় পাঠানোর অভিযোগে রুশ প্রেসিডেন্টকে অভিযুক্ত করা হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় ক্রেমলিন জানায়, ১৯৯৯ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা পুতিনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা মানে বিশ্বের সবচেয়ে পারমাণবিক ক্ষমতাধর দেশের সঙ্গে যুদ্ধ লাগানো। এমনকি, পুতিনের সঙ্গে পক্ষপাতমূলক আচরণ করা হচ্ছে বলে দাবি ক্রেমলিনের।
১৯৯৮ সালে ১২০টি দেশ আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের ‘রোম সংবিধি’ নামে একটি চুক্তিতে সই করে। ওই চুক্তি অনুসারে, ২০০২ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে বিশ্বের ১২৩টি দেশ রোম চুক্তি স্বাক্ষর করে এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের কার্যক্রমকে অনুমোদন দেয়। তবে, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন; এমনকি অভিযোগকারী ইউক্রেনও এই আইসিসির সদস্য নয়। রাশিয়াও এটিই বলছে।
২০০০ সালে রোম সংবিধিতে স্বাক্ষর করেছিল রাশিয়া। তবে, দেশটি আইসিসির সদস্য হয়নি। এমনকি, ২০১৬ সালে রোম সংবিধি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেই তারা। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রতিবেশী ইউক্রেনে আগ্রাসন চালায় রাশিয়া, যা এখনও চলমান। ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়া যুদ্ধাপরাধ করছে বলে অভিযোগ করছে কিয়েভসহ পশ্চিমারা। তবে, এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে মস্কো।