আবের পরিবারকে বাইডেনের চিঠি পৌঁছে দিলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার সঙ্গে সোমবার টোকিওতে সাক্ষাত করেছেন দেশটিতে সফররত মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন। সাক্ষাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের একটি চিঠি আবের পরিবারকে হস্তান্তর করেন তিনি। একইসঙ্গে প্রয়াত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেন এবং একটি শক্তিশালী দ্বিপক্ষীয় জোটের আশ্বাস দেন।
বার্তা সংস্থা ইউএনবি আজ সোমবার এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে। এর আগে রোববার সংসদীয় নির্বাচনে জাপানের ক্ষমতাসীন দল এবং তার জোট বিপুল ভোটে জয়লাভ করে।
শিনজো আবের গুলিবিদ্ধ হওয়ার সময় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইন্দোনেশিয়ার বালিতে জি-২০ জোটভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনে ছিলেন।
আবের পরিবারকে চিঠি হস্তান্তরের সময় ব্লিংকেন বলেন, ‘আমরা তাদের জানাতে চাই যে, ব্যক্তিগত পর্যায়েও আমরা গভীরভাবে ক্ষতি অনুভব করছি। আমি এখানে এসেছি, কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও জাপান মিত্রের চেয়ে বেশি—আমরা বন্ধু।’
ব্লিংকেন বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং জাপানের মধ্যে সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় উন্নীত করার জন্য আবের অবদান সবার চেয়ে বেশি।’
ব্লিংকেন হলেন আবের মৃত্যুর পর জাপানে যাওয়া সবচেয়ে সিনিয়র মার্কিন কর্মকর্তা।
আবের মৃত্যু পর রোববার ভোট একটি নতুন অর্থ বহন করে, যেখানে জাপানের সমস্ত রাজনৈতিক নেতা বাকস্বাধীনতার গুরুত্ব এবং সহিংসতার বিরুদ্ধে গণতন্ত্র রক্ষার ওপর জোর দেন।
কিশিদা নির্বাচনকে অত্যন্ত অর্থবহ বলে অভিহিত করে বলেছেন, ‘গণতন্ত্র রক্ষায় আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’
লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি এবং এর জুনিয়র কোয়ালিশন পার্টনার কোমেইটো কম শক্তিশালী উচ্চকক্ষের অর্ধেক আসনের জন্য সংখ্যাগরিষ্ঠ ২৪৮ আসনের নির্বাচনে তাদের সম্মিলিত আসন ১৪৬-এ উন্নীত করেছে। এর ফলে প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা ২০২৫ সালের নির্ধারিত নির্বাচন পর্যন্ত বাধা ছাড়াই জাপানের ক্ষমতায় থাকতে পারবেন।
এ জয় কিশিদাকে দীর্ঘমেয়াদী নীতি, যেমন—জাতীয় নিরাপত্তার স্বাক্ষর। কিন্তু, এখনও অস্পষ্ট ‘নতুন পুঁজিবাদী’ অর্থনীতি এবং যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি যুদ্ধোত্তর শান্তিবাদী সংবিধান সংশোধনে তাঁর দলের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়নের সুযোগ করে দেবে।
কিশিদা নির্বাচনে বড় জয়কে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে, শিনজো আবেকে হারানোয় তাঁকে ছাড়া দলকে ঐক্যবদ্ধ করা কঠিন হবে বলে মনে করেন।
রোববার শেষ দিকে গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কিশিদা পুনর্ব্যক্ত করেন, ‘দলীয় ঐক্য অন্য যেকোনো কিছুর চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’
প্রসঙ্গত, ৬৭ বছর বয়সী শিনজো আবে দক্ষিণ জাপানে নির্বাচনী প্রচারণার বক্তৃতা দেওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। গুলিবিদ্ধ আবে তাৎক্ষণিকভাবে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এবং হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই তিনি মারা যান।
জাপানের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদী প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের ওপর হামলা পুরো বিশ্বকে হতবাক করেছে।