ইউক্রেনে আজও সাইরেন আর বিস্ফোরণের শব্দ, দেশ ছাড়ছে লাখো মানুষ
ইউক্রেনে রাশিয়ার ‘সেনা অভিযানে’র পঞ্চম দিন চলছে। আজ সোমবার সকাল থেকে রাজধানী কিয়েভজুড়ে শোনা যায় সাইরেন। শহরের বিপুল মানুষ ভবনের আন্ডারগ্রাউন্ড বা বেজমেন্টে আশ্রয় নিয়েছেন। এ ছাড়া গতকাল রাতভর শহরে শোনা গেছে গুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ। ইউক্রেনের সেনারা বলছেন, সবদিক থেকেই লাগাতার ক্ষেপণাস্ত্র ও গোলা ছুড়ছে রুশ বাহিনী। খবর বিবিসির।
এদিকে, যুদ্ধ থেকে বাঁচতে লাখ লাখ মানুষ ইউক্রেন ছাড়ছে। শরণার্থীর সংখ্যা তিন লাখ ৬৮ হাজার ছাড়িয়েছে বলে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে।
এর মধ্যেই ইউক্রেন-বেলারুশ সীমান্তে আজ সোমবার স্থানীয় সময় সকালে প্রথম বারের মতো রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিরা শর্তহীন আলোচনায় যোগ দেবেন। তবে, আগামী ২৪ ঘণ্টাকে যুদ্ধের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে মনে করছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
অন্যদিকে, রুশ বাহিনী বলছে, তারা ইউক্রেনের ১৪টি সামরিক বিমানঘাঁটি ধ্বংস করেছে। এ ছাড়া ধ্বংস করা হয়েছে ১৯টি সামরিক কমান্ড পোস্ট, ২৪টি এস-৩০০ বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা এবং ৪৮টি রাডার স্টেশন। এ ছাড়া ইউক্রেনের নৌবাহিনীর আটটি জাহাজে আঘাত হেনেছে রুশ বাহিনী। সব মিলিয়ে ধ্বংস করা হয়েছে ৮০০ সামরিক স্থাপনা।
এ ছাড়া ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের কাছে হোস্তোমিল বিমানবন্দরে আন্তোনভ এএন-২২৫ মডেলের বিশ্বের সবচেয়ে বড় উড়োজাহাজটি ধ্বংস করা হয়েছে। এরই মধ্যে দক্ষিণাঞ্চলের খেরশন ও নোভা কাখোভকা এবং পূর্বাঞ্চলীয় বারদিয়ানস্ক শহর দখলে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে রুশ সেনারা। এর আগের দিন মালিতোপোল শহর দখলে নেওয়ার দাবি করে তারা। ইউক্রেনের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ শহর খারকিভের দখল নিতেও মরিয়া হয়ে উঠেছে রুশ সেনারা।
তবে ইউক্রেন বলছে, রুশ বাহিনী প্রতিরোধের মুখে পড়েছে। কয়েকটি শহরে পথে পথে দুপক্ষের মধ্যে যুদ্ধ হচ্ছে। বহু রুশ সেনাকে হত্যার খবর ও সাজোয়া যান দখলের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দিচ্ছেন ইউক্রেনের সেনারা।
এ ছাড়া রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করতে ইউক্রেনে অস্ত্র ও গোলাবারুদ পাঠাচ্ছে পশ্চিমারা। ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেন বলছেন, ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এমনটা করছে তারা।
এরই মধ্যে রাশিয়াকে বিশ্ব ব্যবস্থা থেকে বিচ্ছিন্ন করার জোর চেষ্টা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা। আয়ারল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, নরওয়ে, সুইডেন, ডেনমার্ক, নেদারল্যান্ডস, জার্মানি, বেলজিয়াম, ফ্রান্স, ইতালি, স্লোভেনিয়া, অস্ট্রিয়া, পোল্যান্ড, চেক প্রজাতন্ত্র, লিথুয়ানিয়া, লাটভিয়া, এস্তোনিয়া তাদের আকাশসীমায় রাশিয়ার উড়োজাহাজ চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। নাগরিকদের রাশিয়া ছাড়ার নির্দেশনাও দিয়েছে ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্র।