ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের নিন্দা
যুদ্ধ শুরুর পর প্রথমবারের মতো ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের কেন্দ্রস্থলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোসহ দেশটির বহু শহরে বোমাবর্ষণ ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপে ব্যাপক নিন্দা ও সমালোচনার মুখে পড়েছে রাশিয়া। গতকাল সোমবারের এই হামলাকে ‘বর্বর’ বলে আখ্যায়িত করে নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। খবর বিবিসির।
আজ মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানায়, ক্রিমিয়া উপদ্বীপের সঙ্গে রাশিয়াকে সংযুক্তকারী ইউরোপের বৃহত্তম রেল ও সড়ক সেতুতে ভয়াবহ হামলার জবাবে ইউক্রেনজুড়ে ব্যাপক মিসাইল হামলা চালিয়েছে রুশ বাহিনী। গতকাল সোমবার পূর্ব ইউরোপের দেশটির বিভিন্ন শহরে কার্যত মিসাইল বৃষ্টি চালায় রাশিয়া।
প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র বলছে রাশিয়ার ‘বর্বর’ হামলাটি একটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিশুদের খেলার মাঠসহ বেসামরিক বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে। একইসঙ্গে রুশ হামলা মোকাবিলায় চলমান সামরিক সহায়তা আরও বাড়ানোরও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দেশটি।
ইউক্রেনজুড়ে রাশিয়ার হামলার প্রতিক্রিয়ায় জাতিসংঘের প্রধান আন্তেনিও গুতেরেস বলেন, তিনি ‘গভীরভাবে শোকাহত’।
এদিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, ‘রাশিয়ার সঙ্গে ক্রিমিয়ার সংযোগকারী গুরুত্বপূর্ণ সেতুতে শনিবারের বিস্ফোরণের প্রতিশোধে এ হামলা চালানো হয়েছে।’
ইউক্রেন বলেছে, ‘সোমবার ইউক্রেনজুড়ে ৮৩টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে যার মধ্যে ৪৩টিরও বেশি গুলি করে নামানো হয়েছে।’
গতকাল একটি ভিডিওবার্তায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘ইউক্রেনকে ভয় দেখানো যাবে না। এটি আরও ঐক্যবদ্ধ হতে পারে।’
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ ছাড়াও লভিভ, খারকিভ, ডিনিপ্রো এবং জাপোরিঝিয়া শহরেও ভয়াবহ হামলা হয়েছে। এতে অন্তত ১৪ জন নিহত এবং আরও অনেক আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা।
এদিকে জ্বালানি অবকাঠামোতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ইউক্রেনের বেশ কিছু অঞ্চল পানি ও বিদ্যুৎহীন অবস্থায় রয়েছে। রাজধানী কিয়েভের বাসিন্দারা বলেছেন, রাশিয়া শিশুদের খেলার মাঠ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং জনপ্রিয় তারাস শেভচেঙ্কো পার্কসহ ব্যস্ত বেসামরিক এলাকাগুলোকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করছে বলে মনে হচ্ছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বলেছে, সোমবারের হামলায় যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হয়েছে। অন্যদিকে ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেইন বলেন, রাশিয়া সন্ত্রাস ও বর্বরতার পক্ষে দাঁড়িয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সোমবারের এই হামলার পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সাথে কথা বলেন। এসময় তিনি ‘উন্নত বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাসহ ইউক্রেনকে আত্মরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন’ বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস।
প্রেসিডেন্ট বলেছেন, এসব হামলা পুতিনের ‘অবৈধ যুদ্ধের’ ‘চরম বর্বরতা’ প্রদর্শন করেছে।
অন্যদিকে ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধে নিন্দা না জানিয়ে চীন উত্তেজনা কমানোর আহ্বান জানিয়েছে।