ইউক্রেন পুনর্গঠনে ৪১১ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন : বিশ্বব্যাংক
রাশিয়ার আগ্রাসনে গত এক বছরজুড়ে ইউক্রেন যে পরিমাণ ক্ষতির মুখোমুখী হয়েছে, তা পুনর্গঠনে লেগে যাবে কয়েকশ বিলিয়ন ডলার। আর সেই লক্ষ্যে কাজ এগিয়ে নিতে সময় লাগবে ১০ বছর। এসময়ে প্রয়োজন হবে ৪১১ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে বিধ্বস্ত শহর ও শহরগুলোর ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কারেই লেগে যাবে পাঁচ বিলিয়ন ডলার। আজ বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বব্যাংক গতকাল বুধবার জানিয়েছে, রাশিয়ার আগ্রাসনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত ইউক্রেন পুনর্গঠন ও পুনরুদ্ধারে আগামী ১০ বছরে প্রয়োজন হবে ৪১১ বিলিয়ন ডলার।
বুধবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই অনুমান যুদ্ধের সময়কালের ওপর নির্ভর করছে। ‘যতই যুদ্ধ চলবে, ততই এই চাহিদা বাড়তে থাকবে। ফলে ন্যূনতম হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।’
এর আগে গত সেপ্টেম্বরে ইউক্রেন সরকার, বিশ্বব্যাংক, ইউরোপীয় কমিশন এবং জাতিসংঘ যৌথভাবে একটি পুনর্গঠন মূল্যায়ন তুলে ধরে। ওই মূল্যায়ন অনুপাতে বর্তমানের প্রতিবেদনে পুনর্গঠন ব্যয় আনুমানিক ৩৪৯ বিলিয়ন ডলার বৃদ্ধি পেয়েছে।
সর্বশেষ মূল্যায়নে আশা করা হয়, ২০২৩ সালে জরুরি এবং অগ্রাধিকারমূলক পুনর্গঠন এবং পুনরুদ্ধার কাজে বিনিয়োগের জন্য কিয়েভের ১৪ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ শুরুর পর লক্ষাধিক মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং যুদ্ধের ফলে বিশ্বব্যাপী খাদ্য ও জ্বালানির দাম বেড়েছে।
প্রতিবেদনে রাশিয়ার যুদ্ধের কিছু অর্থনৈতিক ও মানবিক ক্ষতির বিবরণ দেওয়া হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, রাশিয়ার আগ্রাসনে এ পর্যন্ত প্রায় দুই মিলিয়ন ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, অনুপাতিক হার বিবেচনায় পাঁচটির মধ্যে একটির বেশি জনস্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া সাড়ে ছয়শ অ্যাম্বুলেন্স ক্ষতিগ্রস্ত বা চুরি হয়েছে এবং ৪৬১ শিশুসহ অন্তত নয় হাজার ৬৫৫ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের ইউরোপ ও মধ্য এশিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট আনা বজেরদে গতকাল বলেছেন, ‘ইউক্রেনের পুনর্গঠনে কয়েক বছর সময় লাগবে।’ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ভবন এবং অবকাঠামোগত সরাসরি ক্ষতির পরিমাণ এখন পর্যন্ত ১৩৫ বিলিয়ন। এরমধ্যে বছরের বেশি সময় ধরে চলা সংঘাতের বৃহত্তর অর্থনৈতিক পতনকে ধরা হয়নি।
বিশ্বব্যাংক বলছে, গত গ্রীষ্মের তুলনায় বর্তমানে পাঁচবার শক্তিখাত ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে।
অন্যদিকে, ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ড্যানিস শিমহাল বলেছেন, ‘এ বছর আমাদের পাঁচটি খাতে অগ্রাধিকার থাকছে। এরমধ্যে রয়েছে—জ্বালানি অবকাঠামো, আবাসন, সংকটপূর্ণ অবকাঠামো, অর্থনীতি ও মানবিক বিষয়।’ তিনি আরও সতর্ক করে বলেন, ‘ক্ষতির পরিমাণ ও এর সংস্কারে যে অর্থের প্রয়োজনের কথা বলা হচ্ছে তার মধ্যে অবকাঠামো, আবাসন এবং ব্যবসার ক্ষতি ধরা হয়নি।’
ড্যানিস শিমহাল আরও বলেছেন, ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ এসব অঞ্চল মুক্ত করার পর পুনরুদ্ধারের কাজ শুরু করবে।