ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে উজবেকিস্তানে শি-পুতিন বৈঠক
এ সপ্তাহের শেষে উজবেকিস্তানে হতে যাওয়া শীর্ষ বৈঠকে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছে ক্রেমলিন। কোভিড অতিমারির পর এই প্রথম শি জিনপিং বিদেশ সফরে যাচ্ছেন। দুই নেতার এই বৈঠকটি পশ্চিমা বিশ্বের নেওয়া উদ্যোগের বাইরে ‘বিকল্প’ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বৈঠকটি এমন সময়ে হচ্ছে যখন শি জিনপিং তৃতীয় মেয়াদে চীনের প্রেসিডেন্ট হতে চাইছেন আর অন্যদিকে ইউক্রেন পরিস্থিতির কারণে রাশিয়ান নেতা ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে পশ্চিমা বিশ্বের সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে।
বুধবার থেকে শুরু হতে যাওয়া তিন দিনের এই সফরে শি বৃহস্পতিবার পুতিনের সঙ্গে সমরখন্দে বৈঠকে বসবেন। সেখানে সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) শীর্ষ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ১৫ থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর।
সম্মেলনে পুতিন ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক ও ইরানের নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক করবেন। তবে শি জিনপিংয়ের সঙ্গে তাঁর বৈঠককে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন ক্রেমলিনের পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক মুখপাত্র ইউরি উশাকভ। তাঁর ভাষায় শীর্ষ সম্মেলনটি হতে যাচ্ছে বিশ্বব্যাপী ব্যাপক রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে।
চীন ও রাশিয়া দীর্ঘদিন থেকেই ২০০১ সালে সাবেক সাভিয়েত ইউনিয়নভূক্ত মধ্য এশিয়ার চারটি দেশ নিয়ে গঠিত এসসিও-কে পশ্চিমা বিশ্বের বহুজাতিক সংগঠনের বিকল্প হিসেবে দাঁড় করানোর চেষ্টা চালিয়ে আসছে।
শি’র এই সফর এমন একটা সময়ে হচ্ছে যখন ‘জিরো কোভিড’ নীতিতে চলা চীন নতুন করে সংক্রমনের কারণে বিভিন্ন শহর ও প্রদেশ লকডাউনের আওতায় আনছে যেখানে বাকী বিশ্ব ভাইরাসটিকে সঙ্গে নিয়েই চলতে হবে মেনে নিয়ে সব কিছু খুলে দিচ্ছে।
২০২০ সালের জানুয়ারিতে চীনের উহানে লকডাউন ঘোষণার কয়েকদিন আগে শি মিয়ানমার সফর করেন, তারপর থেকে তিনি চীনের মূল ভূখন্ডেই ছিলেন শুধুমাত্র জুলাইয়ে হংকং সফরে যাওয়া ছাড়া।
অন্যদিকে, পুতিনের বিদেশ সফরও বিরল। রাশিয়ান সৈন্যরা ইউক্রেনে অভিযান চালানোর পর জুলাইয়ে তেহরানে তুরস্ক ও ইরানের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকটি ছিল তাঁর দ্বিতীয় বিদেশ সফর।
এ বছর এটা হবে তাঁদের দ্বিতীয় বৈঠক, এর আগে ফেব্রুয়ারিতে তারা বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত শীতকালীন অলিম্পিকের সময় দেখা করেছিলেন। ওই বৈঠকের পর দুই নেতা এক যৌথ বিবৃতিতে দুই দেশের বন্ধুত্বের বন্ধনে কোনো সীমা নেই বলে উল্লেখ করেছিলেন। তবে এর কয়েকদিন পরেই রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করে আর চীন এ পদক্ষেপের নিন্দা বা সমর্থন কোনোটাই করেনি।
এসসিও’র আওতাধীন অঞ্চলে চীন বেল্ট এন্ড রোড প্রজেক্টের আওতায় অন্যতম প্রধান বিনিয়োগকারী দেশ। এসসিও হচ্ছে ২০০১ সালে গঠিত একটি ইউরোশিয় রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা বিষয়ক সংগঠন যার উদ্যোক্তা দেশ হচ্ছে চীন, রাশিয়া, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, তাজিকিস্তান ওবং উজবেকিস্তান। এছাড়া ইরান সম্প্রতি এই জোটের সদস্য হওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করছে।