ইউক্রেন সংকট : পূর্ব ইউরোপে সেনা দ্বিগুণ করতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্য
ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়াকে চাপে রাখতে পূর্ব ইউরোপে মোতায়েন করা সেনা সংখ্যা দ্বিগুণ করার কথা ভাবছে যুক্তরাজ্য। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, ‘সম্ভাব্য এ বাড়তি সেনা মোতায়েন ক্রেমলিনকে পরিষ্কার বার্তা দেবে।’
অন্যদিকে, ইউক্রেনকেন্দ্রিক উত্তেজনা প্রশমনের উদ্যোগ নিতে যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাশিয়ার প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
কয়েকদিনের মধ্যেই রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে বরিস জনসন ফোন করবেন বলে বিবিসির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও এ সপ্তাহে পূর্ব ইউরোপ সফরে যাবেন। তিনি বলেছেন, ‘রাশিয়া কোনো ধরনের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালালে তা সহ্য করবে না যুক্তরাজ্য। আমরা ন্যাটোর মিত্রশক্তির পক্ষেই দাঁড়াব।’
বরিস জনসন বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট পুতিন রক্তপাত ও ধ্বংসযজ্ঞের পথ বেছে নিলে ইউরোপের জন্য তা হবে ট্র্যাজেডি। ইউক্রেনকে অবশ্যই তার নিজের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে স্বাধীন থাকতে দিতে হবে।’
সাবেক সোভিয়েত রাষ্ট্র ইউক্রেনের সীমান্তবর্তী এলাকায় লাখখানেক সেনা মোতায়েন করে রেখেছে রাশিয়া। একইসঙ্গে ওই এলাকায় ট্যাংক, গোলাবারুদ ও ক্ষেপণাস্ত্রও মজুদ করা হয়েছে। কিন্তু, শুরু থেকেই যুদ্ধ বা আগ্রাসনের পরিকল্পনার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে রাশিয়া। তবে, স্নায়ুযুদ্ধের সময়ের পর ওই অঞ্চলে আর কখনোই এত পরিমাণ সামরিক শক্তি জমায়েত করেনি রাশিয়া।
প্রশিক্ষণজনিত কারণে এস্তোনিয়ায় একটি ঘাঁটিতে যুক্তরাজ্যের নয় শতাধিক এবং ইউক্রেনে ১০০ জনের মতো সেনা রয়েছে। অন্যদিকে, পোল্যান্ডে দেড়শ’র মতো ব্রিটিশ সেনা রয়েছে। ইউরোপ এবং রাশিয়া উভয়ের সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে ইউক্রেনের।
আশপাশের দেশে সেনা সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি এস্তোনিয়ায় উচ্চগতির যুদ্ধবিমান, রণতরী, সামরিক বিশেষজ্ঞসহ অন্যান্য প্রতিরক্ষামূলক অস্ত্রশস্ত্র পাঠাতে পারে যুক্তরাজ্য।
ইউক্রেন ন্যাটো জোটের সদস্য দেশ নয়। রাশিয়া চায় ইউক্রেন যেন ন্যাটো জোটের অন্তর্ভুক্ত হতে না পারে। তবে, রাশিয়ার সীমান্তবর্তী দেশ এবং সাবেক সোভিয়েত রাষ্ট্র লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া ও এস্তোনিয়া ন্যাটো জোটে রয়েছে।
গত মাসে রাশিয়া ন্যাটোর কাছে তিনটি দাবি জানিয়েছে। এক. ইউক্রেনকে যেন সামরিক জোটটির সদস্য না করা হয়। দ্বিতীয়ত, পূর্ব ইউরোপে ন্যাটো যেন কোনো সামরিক কার্যক্রম না চালায় এবং তৃতীয় দাবিটি হচ্ছে—রাশিয়ার সীমান্তবর্তী কোনো দেশে যেন ক্ষেপণাস্ত্র না বসানো হয়।