ইমরান খানকে গ্রেপ্তার না করেই ফিরল পুলিশ
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের লাহোরের জামান পার্কের বাড়ির বাইরে পুলিশ ও তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনার শেষ হয়েছে। পিটিআই প্রধানকে গ্রেপ্তার না করেই সেখান থেকে চলে গেছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো। আর এমনটি হয়েছে লাহোর আদালতের জন্যই। আজ বুধবার (১৫ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ডন।
পাকিস্তানের সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক ডন পত্রিকা জানায়, লাহোরের সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপে ইমরানের বাড়ি থেকে সরে গিয়েছে ইসলামাবাদ পুলিশের সদস্যরা। সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে গ্রেপ্তারের অভিযান আগামীকাল সকাল ১০টা পর্যন্ত স্থগিত রাখতে বলেছে সর্বোচ্চ আদালত। আর ইসলামাবাদের আদালত ইমরানের জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানার বাতিলের আবেদন খারিজ করেছে।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ইমরানকে গ্রেপ্তারের জন্য সাঁজোয়া যান নিয়ে তাঁর জামান পার্কের বাড়িতে যায় ইসলামাবাদ পুলিশ। খবরটি ছড়িয়ে পড়ার পর বাড়িটি ঘিরে ফেলে পিটিআই নেতাকর্মীরা। পুলিশ ইমরানকে গ্রেপ্তারে বাড়ির ভেতর যেতে চাইলে এসব কর্মী-সমর্থক পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়ে। পুলিশও তাদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে। একপর্যায়ে ইমরানের বাড়ির পার্শ্ববর্তী জামান পার্কে পিটিআই কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। পরে দলীয় কর্মী ও সমর্থকদের রাস্তায় নামার আহ্বান জানান পিটিআই প্রধান।
এদিকে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা চলে যাওয়ার পরে জামান পার্কের অবস্থা শান্ত হয়। তখনও অনেক নেতাকর্মীদের ইমরানের বাড়ির বাইরে দেখা যায়।
ক্ষমতা হারানোর পর থেকে ইমরান খানের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা হয়েছে। এমনকি ক্ষমতা হারানোর জন্য বিদেশিদের দায়ী করেছেন তিনি। ক্ষমতা হারানোর পর ইমরানকে হত্যার জন্য হামলা চালানো হয়। বিভিন্ন মামলায় আদালতে উপস্থিত হতে হচ্ছে পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে। তবে, নিরাপত্তা ইস্যুর জন্য তিনি সম্প্রতি আদালতে হাজির হচ্ছেন না। এমনকি ভার্চুয়ালি আদালতে উপস্থিত থাকার অনুমোদন চেয়ে তিনি আবেদনও করেন।
সর্বশেষ গত সোমবার দুটি মামলায় আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় ইমরানের বিরুদ্ধে দুটি জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। তবে, গতকাল বিচারক ও পুলিশের হুমকি মামলায় জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বাতিল করা হয়।
বাসভবনের সামনে থেকে পুলিশ সরে যাওয়ার পর ইমরান তাঁর কর্মী-সমর্থকদের ধন্যবাদ জানান। পিটিআই প্রধান বলেন, ‘ক্ষমতাসীন সরকার আমাকে জেলে বন্দি রাখতে চায়। আমি যেন নির্বাচন করতে না পারি এটাই তাদের প্রধান উদ্দেশ্য।’
এদিকে, এখনও পিটিআইয়ের ক্ষমতায় থাকা গিলগিট ও বালতিস্তানে পুলিশের ওপর হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী মরিয়ম আওরঙ্গজেব। ইসলামাবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে মরিয়ম বলেন, ‘পিটিআই প্রধান তার গুন্ডাবাহিনীকে পুলিশের ওপর হামলার জন্য নির্দেশ দিয়েছে। গিলগিট ও বালতিস্তানে পুলিশের ওপর আক্রমণ করেছে তারা।’
ইমরানের বাসভবনের বাইরে পিটিআই নেতাকর্মীদের হামলায় ৬৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলে দাবি করছে মরিয়ম। পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এমনটা চলতে পারে না। পুলিশ আদালতের নির্দেশনা মানতে সেখানে গিয়েছিল। আদালত ইমরানকে এখনও অব্যাহতি দেয়নি।’