ইমরান খানকে সংসদ সদস্য পদে অযোগ্য ঘোষণা
পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের প্রধান ইমরান খানকে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে মিথ্যা ঘোষণা দেয়ার অভিযোগে সংসদ সদস্য পদে অযোগ্য ঘোষণা করেছে।
পাকিস্তানের সংবিধানের ৬৩ (১) (পি) ধারা অনুযায়ী ইমরান খানকে দেশটির পার্লামেন্ট ও প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য হিসেবে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়। ইসলামাবাদে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার সিকান্দার সুলতান রাজার সভাপতিত্বে চার সদস্যের বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন। পাঁচ সদস্যর বেঞ্চ সর্বসম্মতভাবে এই সিদ্ধান্ত নেয় তবে পাঞ্জাবের সদস্য রায় ঘোষণার সময় উপস্থিত ছিলেন না। খবর ডনের।
রায় অনুযায়ী মিথ্যা ঘোষণা দেয়ার অভিযোগে ইমরান খানের বিরুদ্ধে ফৌজদারি আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মিথ্যা ঘোষণা দেওয়ার এই অভিযোগটি দায়ের করা হয় গত আগস্ট মাসে। অভিযোগে বলা হয় ইমরান খান ক্ষমতায় থাকার সময় রাষ্ট্রীয় কোষাগারের বিভিন্ন উপহার বিক্রি করার বিষয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন। এই অভিযোগটি দায়ের করে ক্ষমতাসীন পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (পিডিএম) কোয়ালিশন সরকারের সংসদ সদস্যরা। তারা এটি পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ স্পিকার রাজা পারভেজ আশরাফের কাছে উত্থাপন করলে স্পিকার তা প্রধান নির্বাচন কমিশনার সিকান্দার সুলতান রাজার কাছে পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য পাঠিয়ে দেন।
পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় কোষাগার (তোষাখানা) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডের অধীন একটি বিভাগ যেখানে বিদেশি রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের দেশটির শাসক, সংসদ সদস্য ও আমলাদের দেয়া উপহার সংরক্ষিত থাকে। এসমস্ত উপহারের বিষয়ে শাসকদের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে জবাবদিহি করতে হয়।
তবে পিটিআই ২০১৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইমরান খান যেসব উপহার পেয়েছিলেন সে বিষয়ে বিস্তারিত বিবরণ দিতে অনিচ্ছুক ছিলেন। ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে তোষাখানার অন্তত চারটি মূল্যবান উপহার বিক্রি করেছিলেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
অন্যদিকে এই রায়ের পরপর পিটিআই নেতা ফাওয়াদ চৌধুরী পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের বাইরে গণমাধ্যমে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানের জনগণকে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ঘর থেকে বের হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি পাকিস্তান নির্বাচন কমিশনের এই রায়কে পাকিস্তানের ২২ কোটি জনতার মুখে ‘চপেটাঘাত’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আজ থেকেই বিপ্লব শুরু হলো, কেউই ইমরান খানকে অযোগ্য ঘোষণা করতে পারবে না একমাত্র জনগণ ছাড়া।’