ইরাকেও প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের সুইমিং পুলে বিক্ষোভকারীদের জলকেলি
ইরাকের প্রভাবশালী শিয়া মুসলিম নেতা মুক্তাদা আল-সদর রাজনীতি ছেড়ে অবসরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এর পরপরই বাগদাদে প্রেসিডেন্টের প্রাসাদে ঢুকে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। শুধু তাই নয়, প্রেসিডেন্টের সুইমিং পুলে জলকেলিতে মেতে উঠেন বিক্ষোভকারীরা। দুমাস আগে শ্রীলঙ্কায় এই দৃশ্য দেখা গিয়েছিল।
ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, প্রেসিডেন্টের প্রাসাদে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা। সুইমিং পুলে নেমে সাঁতার কাটতেও দেখা যায় তাদের। খবর ইল-জাজিরার।
গত অক্টোবর মাসে ইরাকের পার্লামেন্ট নির্বাচনে মুক্তাদার দল সবচেয়ে বেশি আসনে জয়ী হয়েছিল। কিন্তু সরকার গঠনে জটিলতা তৈরি হয়। জোট সরকার গড়তে রাজি হননি তিনি। যার ফলে এখনও সরকার গঠন হয়নি দেশটিতে। পার্লামেন্ট ভেঙে নতুন করে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছিলেন তিনি। এই পরিস্থিতির মধ্যেই মুক্তাদার রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণায় নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে।
সোমবার (২৯ আগস্ট) মুক্তাদা আল-সদরের পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়ার পরপরই বিশৃঙ্খলা ও সংঘর্ষের জেরে অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছে ইরাকে।
মুক্তাদা আল-সদর এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমি রাজনৈতিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আর এখন আমি রাজনীতি থেকে পুরোপুরি অবসরে যাওয়া এবং আমার সব সংগঠন বন্ধের ঘোষণা দিচ্ছি।’ তবে আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কিছু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে বলে জানান তিনি।
যদিও মুক্তাদা আল সদরের রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা এবারই প্রথম নয়। এর আগেও ২০১৩ এবং ২০১৪ সালে তিনি একই রকম ঘোষণা দেন।
ইরাকে রাজনৈতিক সংকটের জেরে কয়েক মাস ধরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। আল-সদরের সমর্থকরা তাদের নেতার পদত্যাগের ঘোষণার পরেই সরকারি প্রাসাদে হামলা চালায় বলে অভিযোগ উঠেছে। বিশৃঙ্খলা জেরে এরপরই কারফিউ জারি করা হয় বাগদাদে।
নিরাপত্তা বাহিনী বিক্ষোভকারীদের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ থেকে বের করে দেয় এবং প্রাসাদটি এখন নিরাপত্তা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানা গেছে। তবে প্রেসিডেন্ট কোথায় তা এখনো স্পষ্ট নয়।
সম্প্রতি প্রেসিডেন্টের প্রাসাদে বিক্ষোভকারীদের ঢুকে পড়ার কাণ্ড ঘটে শ্রীলঙ্কায়। আর্থিক সংকটে বেসামাল দ্বীপরাষ্ট্রটির সাবেক প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসের প্রাসাদে ঢুকে পড়েছিলেন কয়েকশো বিক্ষোভকারী।
প্রেসিডেন্টের বিছানা, সুইমিং পুল, বাগান, জিমে ঘুরে ফিরে আয়েস করতে দেখা গিয়েছিল আন্দোলনকারীদের। বেশ কয়েকদিন সেখানে অবস্থানও করেন তারা। অনেকে রান্না করেও খান প্রেসিডেন্টের বাসভবনে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় দেশটির সেনাবাহিনী।