ইরানে সহিংস বিক্ষোভ অব্যাহত : পুলিশের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা
‘অনুচিত পোশাক’ পরার অপরাধে আটক ইরানি নারী মাশা আমিনির পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর প্রতিবাদে দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়া সহিংস বিক্ষোভে এ পর্যন্ত ১৭ জনের প্রাণহানির পর ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি বলেছেন ‘মৃত্যু’র ঘটনাটির অবশ্যই তদন্ত হবে।
এদিকে, ক্ষমতার অপব্যবহার, ইরানি নারী ও প্রতিবাদীদের বিরুদ্ধে সহিংসতার অভিযোগে ইরানের তথাকথিত ‘নৈতিকতা পুলিশে’র বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বাইডেন প্রশাসন। খবর বিবিসি ও আল-জাজিরার।
ক্রমশ সহিংস থেকে সহিংসতর হয়ে ওঠা বিক্ষোভ ইরানের প্রায় ৮০টি ছোট-বড় শহরে ছড়িয়ে পড়েছে। কোনো কোনো এলাকার অবস্থা এতোই খারাপ যে সেগুলোকে ‘যুদ্ধক্ষেত্রে’র সঙ্গে তুলনা করছেন স্থানীয়রা।
পরিস্থিতি সামলাতে সরকার দেশটির প্রধান মোবাইল টেলিফোন নেটওয়ার্কসহ আরেকটি বেসরকারি সেবাদান প্রতিষ্ঠানের নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দিয়েছে। পাশাপাশি দেশজুড়ে বন্ধ রয়েছে ইন্টারনেট সেবা।
এদিকে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে আসা ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি মাশা আমিনির মৃত্যুতে পশ্চিমা বিশ্বের ‘উদ্বেগ’কে কপটতা হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ‘প্রতিদিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আমরা দেখছি পুলিশের অভিযানে নারী-পুরুষ মারা যাচ্ছে কিন্তু এর কারণ নিয়ে কোনো স্পর্শকাতর পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে না বা বিষয়টিকে সহিংসতার পর্যায়ে ফেলা হচ্ছে না’।
যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে পুলিশি হত্যার প্রসঙ্গ টেনে রাইসি পশ্চিমা বিশ্বকে ‘দ্বৈত নীতি’ অনুসরনের বিষয়ে অভিযুক্ত করেন। তাঁর এই মন্তব্য আসে ইরানের নৈতিকতা পুলিশের ওপর অবরোধ আরোপের ঠিক ঘন্টা খানেকের মধ্যে। কট্টরপন্থি প্রেসিডেন্টের এই বিক্ষোভকারীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির কর্মকাণ্ড গ্রহণযোগ্য হবে না’।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ বৃহস্পতিবার ইরানের ‘নৈতিকতা পুলিশ’ ও দেশটির নিরাপত্তা সংস্থার সাত নেতার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে জানায় যে, তারা ইরানের সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বী, নারী অধিকার কর্মীসহ দেশটির বাহাই সম্প্রদায়ের মানুষের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকে থামাতে নিয়মিতভাবে সহিংস আচরণ করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি সেক্রেটারি জানেট ইলেন এক বিবৃতিতে পুলিশি হেফাজতে মাশা আমিনির মৃত্যুকে নিজ দেশের মানুষের ওপর ইরানের শাসকদলের নিরাপত্তা বাহিনীর নৃসংশ আচরণের আরেকটি বহিঃপ্রকাশ হিসেবে উল্লেখ করেন।
অভিযোগ রয়েছে আঁটসাট ট্রাউজার ও মাথার স্কার্ফ ঠিকমতো না পরার কারণে নৈতিকতা পুলিশ ২২ বছর বয়সী মাশা আমিনিকে লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করে ও তার মাথা সজোরে পুলিশ ভ্যানের সাথে ঠুকে দেয়। তবে পুলিশ এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে ও জানায় যে আমিনি হঠাৎ হার্ট অ্যাটাকে মারা যান।