ইরান: জার্মানির নিন্দা, নতুন নিষেধাজ্ঞার হুমকি
জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী বেয়ারবক বলেছেন, 'ইরানের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা জারি করবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। যেভাবে বিক্ষোভ দমন করা হচ্ছে, তার প্রতিবাদে এই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
একটি সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বেয়ারবক বলেন, যারা এই কাজ করছেন তারা যাতে আর ইইউ-তে ঢুকতে না পারেন, সে ব্যবস্থা তিনি করবেন। ইইউর ২৭টি দেশে জড়িত এই মানুষদের সব সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হবে।'
ইরানকে উদ্দেশ্য করে বেয়াবক বলেন, ‘যারা রাস্তায় প্রতিবাদরত মেয়েদের মারছেন, অপহরণ করছেন, তারা ইতিহাসের ভুল দিকে আছেন। তারা মেয়েদের স্বাধীনভাবে বাঁচতে দিতে চান না।’ বেয়ারবক এর আগে ইরানের কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়ে বলেছিলেন, ’তারা যেন নারীদের দাবি মেনে নেন, কারণ তারা ন্যূনতম অধিকার চাইছে। কিন্তু ইরান সরকার গত চার সপ্তাহ ধরে নারীদের নির্বিচারে আটক করছে।
মানবাধিকার সংস্থাগুলোর একাধিক প্রতিবদেনে বলা হয়েছে, ইরানে ১৮৫ জন বিক্ষোভকারীকে হত্যা করা হয়েছে, কয়েকশ’ নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদিকে ইরানের রাজনৈতিক নেতারা গত রোববার দেশের পরিস্থিতি নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেছিলেন। মাশা আমিনির মৃত্যুর পর ইরান-জুড়ে যে বিক্ষোভ হচ্ছে, তা নিয়েই বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। আমিনির মৃত্যুর পর ইরানে নারীরা রাজপথে বিক্ষোভ করছেন। অনেক চুল কেটে, কেউ কেউ হিজাব পুড়িয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। বৈঠকে ইরানের প্রেসিডেন্ট সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রায়িসি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পার্লামেন্টের স্পিকার, বিচারবিভাগের প্রধান।
ইরানে শনিবারও দুই বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে। উত্তর ইরানে কুর্দি-প্রধান অঞ্চলে এই ঘটনা ঘটেছে। ফ্রান্সভিত্তিক সংগঠন কুর্দিস্তান হিউম্যান রাইটস নেটওয়ার্ক এবং নরওয়েভিত্তিক হেনগও অর্গানাইজেশন ফর হিউম্যান রাইটসের রিপোর্ট বলছে, অন্ততপক্ষে দুইজন বিক্ষোভকারী মারা গেছেন। নিরাপত্তা বাহিনী বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালালে ওই দুজনের মৃত্যু হয়। তারপরেও ইরানে বিক্ষোভ থামেনি। সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট রায়িসি আলজাহরা বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলে বিক্ষোভকারীরা 'গো ব্যাক রাইসি' বলে স্লোগানও দেন। এপি, ডিপিএ, এএফপি, রয়টার্স সূত্রের বরাতে।