ইয়েমেনে সৌদি আরবের যুদ্ধকে আর সমর্থন নয় : বাইডেন
ইয়েমেনে সৌদি আরবের যুদ্ধকে যুক্তরাষ্ট্র আর সমর্থন করবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ খোঁজা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট ও ডয়চে ভেলে এ কথা জানায়।
ক্ষমতা গ্রহণের পর ফের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের কথা জানালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক প্রথম বক্তৃতায় গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ‘আমেরিকা ফিরে এসেছে, কূটনীতিও ফিরে এসেছে।’
বাইডেন বলেন, ‘ছয় বছর ধরে ইয়েমেনে সৌদি আরব যে লড়াই চালাচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র সেই লড়াইয়ে সৌদি আরবকে আর সাহায্য করবে না। বরং শান্তিপূর্ণ পদ্ধতিতে কীভাবে মীমাংসার পথ বের করা যায়, সেই চেষ্টা চালানো হবে।’
প্রবীণ কূটনীতিক টিম লেন্ডারকিংকে ইয়েমেন বিষয়ক বিশেষ দূত নিয়োগ দেন বাইডেন।
ইয়েমেনে সৌদি আরবের যুদ্ধে সমর্থন বন্ধের বিষয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার প্রথমে বিবৃতি দেন মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান। পরে বক্তৃতায় বাইডেন নিজেই এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান। প্রেসিডেন্ট স্পষ্ট জানিয়ে দেন, কোনোভাবেই আর সৌদি আরবকে যুদ্ধে মদদ দেওয়া হবে না। বরং ইয়েমেনে প্রতিনিধি দল পাঠিয়ে এই সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের রাস্তা খোঁজা হবে। তবে এর ফলে সৌদি আরবের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের কোনো পরিবর্তন হবে না। যুক্তরাষ্ট্র কেবল যুদ্ধ থেকে নিজেকে সরিয়ে নেবে।
২০১৪ সালে ইয়েমেনে ইরান সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা আক্রমণ শুরু করে। ক্রমেই তারা ইয়েমেনের দখল নিতে শুরু করে। সে সময় সৌদি আরবসহ একাধিক মুসলিম দেশ তার বিরুদ্ধে কার্যত যুদ্ধ ঘোষণা করে। তাদের সাহায্য করে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও ফ্রান্সের মতো পশ্চিমা বিশ্বের দেশগুলো।
মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, ছয় বছরে ইয়েমেনে এক লাখেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। যুদ্ধের ফলে দেশে তীব্র অনাহার ও দারিদ্র্য দেখা দিয়েছে। সব মিলিয়ে এক ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে ইয়েমেন। এই অবস্থায় শান্তিপূর্ণ আলোচনাই একমাত্র পথ বলে মনে করছেন বাইডেন।
এদিন রাশিয়াকে এক হাত নিয়ে বাইডেন বলেন, ‘যেভাবে মার্কিন নির্বাচনে রাশিয়া নাক গলিয়েছে, যেভাবে নিজের দেশের নাগরিককে বিষ দিয়ে মারার চেষ্টা করেছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, যুক্তরাষ্ট্র তা ভালো চোখে দেখছে না। সব কিছুর দিকেই কড়া নজর রাখছে যুক্তরাষ্ট্র।
এ ছাড়াও মিয়ানমারের সেনা অভ্যুত্থান নিয়েও কথা বলেন জো বাইডেন। আটক নেতাদের মুক্তি দিয়ে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে দেশটির সেনাবাহিনীর প্রতি আহ্বান জানান বাইডেন।
চীনকে ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিদ্বন্দ্বী’ আখ্যা দিয়ে জো বাইডেন বলেন, ‘আমরা চীনের অর্থনৈতিক অপব্যবহার রুখে দেব, আগ্রাসী ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড মোকাবিলা করে মানবাধিকার, মেধাস্বত্ত্ব ও বৈশ্বিক ব্যবস্থাপনার ওপর তাদের আঘাত থামাব।’