উইন্ডসর ক্যাসেলে চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন রানি এলিজাবেথ
ব্রিটেনে আজ সোমবার ভোর থেকে শুরু হয়েছে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া। গত ৮ সেপ্টেম্বর তিনি স্কটল্যান্ডের বালমোরালে ৯৬ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
দীর্ঘ সাত দশক তিনি ব্রিটেনের রানির সিংহাসনে অধিষ্ঠিত ছিলেন। নানা আনুষ্ঠানিকতার পর আজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে রানির রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া। সারা বিশ্বের নেতারা অংশ নিয়েছেন তাঁর শেষকৃত্যানুষ্ঠানে।
সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় উইন্ডসর ক্যাসেলের ভেতরে সেন্ট জর্জ চ্যাপেলে রানিকে সমাহিত করা হবে।
উইন্ডসর ক্যাসেল ছিল রানির খুবই পছন্দের একটি জায়গা। রানির প্রিয় এ জায়গাটি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
রয়টার্স জানিয়েছে, উইন্ডসর ক্যাসেল হচ্ছে ব্রিটিশ রাজা-রানিদের অবকাশযাপনের জায়গা। অন্তত ১২ জনেরও বেশির ভাগ রাজা-রানি এখানে অবকাশযাপন করেছেন। এ ছাড়া বেশির রাজা-রানিকে সেন্ট জর্জ চ্যাপেলে সমাহিত করা হয়েছে।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন রাজা অষ্টম হেনরি, যিনি ১৫৪৭ সালে মারা গিয়েছিলেন এবং রাজা প্রথম চার্লস, যাঁকে ১৬৫৯ সালে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
রয়্যাল কালেকশন ট্রাস্ট ওয়েবসাইটের তথ্যমতে, উইলিয়াম দ্য কনকুয়েরর ১১ শতকে উইন্ডসর ক্যাসেল নির্মাণ করেছিলেন। এটিকে বলা হয় বিশ্বের প্রাচীনতম এবং বৃহত্তম দখলকৃত দুর্গ। রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথসহ ৪০ জন ব্রিটিশরাজ এ দুর্গকে বাসভবন হিসেবে ব্যবহার করেছেন।
উইন্ডসর ক্যাসেলের ভেতরে সেন্ট জর্জ চ্যাপেল নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল ১৪৭৫ সালে। রাজা চতুর্থ এডওয়ার্ড এটি শুরু করেছিলেন। সেন্ট জর্জ চ্যাপেলে একটি ক্রুশের ধ্বংসাবশেষ রয়েছে। প্রচলিত রয়েছে যে, যিশুকে যে ক্রুশ দিয়ে বিদ্ধ করা হয়েছিল, সেটির ধ্বংসাবশেষ এটি। এখানে একটি তলোয়ারও রয়েছে। তলোয়ারটি রাজা তৃতীয় এডওয়ার্ড কোনো এক যুদ্ধে ব্যবহার করেছিলেন বলে অনেকেরই ধারণা।
রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ১৯৬২ সালে উইন্ডসর ক্যাসেলের ভেতরে তাঁর বাবা রাজা ষষ্ঠ জর্জের নামে ‘রাজা ষষ্ঠ জর্জ মেমোরিয়াল চ্যাপেল’ চালু করেন। এটি মূল চ্যাপেলের পাশেই। এখানে সমাধিস্থ করা হয়েছে রাজা ষষ্ঠ জর্জ, তাঁর স্ত্রী রানি মা এবং তাঁদের ছোট মেয়ে প্রিন্সেস মার্গারেটকে।
আজ সোমবার রানিকে এখানে তাঁর স্বামী প্রিন্স ফিলিপের পাশাপাশি সমাহিত করা হবে। প্রিন্স ফিলিপ গত বছরের ৯ এপ্রিল মারা গেছেন। তাঁর মরদেহটি রয়্যাল ভল্টে সংরক্ষণ করা হয়েছে যাতে তাঁকে রানির পাশাপাশি সমাহিত করা যায়।