এক মিনিটের জন্য ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন দখল নিল হ্যাকাররা
ইরানের ইসলামি বিপ্লবের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি)। এ উপলক্ষে দেশটিতে দিনব্যাপী চলছে বিভিন্ন কার্যক্রম। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন টেলিভিশনে দেশবাসীর উদ্দেশে ভাষণও দিচ্ছিলেন ইরানের প্রধানমন্ত্রী ইব্রাহিম রাইসি। তবে, ভাষণের সময়েই চ্যানেলটিতে হানা দিয়েছে সরকারবিরোধী হ্যাকাররা। খবর রয়টার্সের।
হ্যাকিংয়ের জন্য চ্যানেলটির অনলাইন ভার্সন এক মিনিটের জন্য হ্যাকারদের দখলে চলে যায়। এ সময় হ্যাকার গ্রুপটির একটি লোগো টিভির পর্দায় ভেসে উঠে। একইসঙ্গে একটি ভয়েসও শোনা যায়। যেখানে বলা হচ্ছিল, ‘ডেথ টু দ্য ইসলামিক রিপাবলিক’।
চ্যানেলটিতে এই হ্যাকিং চালিয়েছে হ্যাকার গ্রুপ ‘আদালত আলি’ বা ‘আলির বিচার’। এর আগেও একই গ্রুপ চ্যানেলটি হ্যাকড করেছিল।
রয়টার্স বলছে, সরকারবিরোধী বিক্ষোভের জেরে বেশ বেগ পোহাতে হচ্ছে রাইসি সরকারকে। বিক্ষোভকারীদের শক্ত হাতে দমন করছে তারা। এই বিক্ষোভকে বাইরের উসকানি বলেও আখ্যা দেওয়া হয়েছে। এমনকি, দেশের যুবকদের সঙ্গে বাইরের শক্তিরা ছলচাতুরী করছে বলেও অভিযোগ তাদের।
ইসলামি বিপ্লবের বার্ষিকী উপলক্ষে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা বিক্ষোভকারীদের ক্ষমা করবেন বলে জানান রাইসি।
নৈতিকতা পুলিশের হেফাজতে গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনি মারা যায়। এই মৃত্যুকে ঘিরে ইরানে বিক্ষোভ শুরু হয়, যা পরে গোটা দেশজুড়ে এটি ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীদের রুখতে কঠোর অবস্থানে যায় ইরানি প্রশাসন। ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর ইরানে দীর্ঘতম চলমান সরকারবিরোধী বিক্ষোভ এটি।
এদিকে, ইসলামি বিপ্লবের বার্ষিকী উপলক্ষে গত রোববার দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি সাধারণ ক্ষমার ঘোষণা দেন। সেই নির্দেশে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন অনশনে বসা ভিন্নমতাবলম্বী ফরহাদ মেসামি ও শিক্ষাবিদ ফারিবা আদেলখা।
শুক্রবার মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থা এইচআরএএনএ জানিয়েছে, চলমান বিক্ষোভে ৫২৮ বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ৭১ জন রয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১৯ হাজার ৭৬৩ বিক্ষোভকারীকে।