ঐতিহাসিক নাম পরিবর্তন প্রসঙ্গে বিজেপিনেতাকে আদালতের হুঁশিয়ারি
ভারতের বিভিন্ন ঐতিহাসিক জনপদ ও স্থানের নামের পরিবর্তন চেয়ে দেশটির সর্বোচ্চ আদালতে আবেদন করেছিলেন ক্ষমতাসীন দল বিজেপির নেতা অশ্বিনী কুমার উপাধ্যায়। তার সেই আবেদন নাকচ করে দিয়ে তাঁকে হুঁশিয়ার করে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট বলেছেন, ‘নির্দিষ্ট কোনো সম্প্রদায়কে নিশানা করে সারা দেশকে অগ্নিগর্ভ করে তুলবেন না।’
অশ্বিনী কুমার উপাধ্যায়ের তার আবেদনে, পুরোনো নাম খুঁজতে ও পরিবর্তনের জন্য একটি নাম বদল কমিশন গঠনের আর্জি জানিয়েছেন। খবর এডিটিভির।
প্রতিবেদনে সংবাদ মাধ্যমটি জানায়, গতকাল সোমবার ভারতের সুপ্রিম কোর্ট শহর ও ঐতিহাসিক স্থানগুলোর নাম পরিবর্তনের জন্য বিজেপি নেতা অশ্বিনীর পিটিশনকে খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। ওই পিটিশনে বিজেপি নেতা নাম পরিবর্তনের একটি স্বাধীন কমিশন দাবি করেন। তার মতে, বিদেশিরা ভারতে এসে প্রাচীন ঐতিহাসিক স্থানের নামে পরিবর্তন করেছে। ধর্মীয় স্থানেরও নাম পরিবর্তন করেছে।
অশ্বিনী কুমারের আইনজীবীর পিটিশনকে খারিজ করে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি কে এম জোসেফ ও বিচারপতি এম ভি নাগরত্নের দ্বৈত বেঞ্চ। এই পিটিশন নিয়ে প্রশ্নও তোলেন ওই দুই বিচারক। তারা পিটিশন দাখিলকারী আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘এসব ইস্যু টেনে এনে আপনি কি দেশকে আগুনে পোড়াতে চান।’
রায় দেওয়ার সময় বেঞ্চ বলে, দেশের ইতিহাস যেন কোনোভাবে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের বোঝা না হয়ে ওঠে।
রায়ে সুপ্রিম কোর্ট বলেন, ‘হিন্দুধর্ম একটি ধর্ম নয় বরং একটি জীবন ব্যবস্থা। হিন্দুধর্মে কোনো গোঁড়ামি নেই। অতীতকে খুঁড়ে ফেলবেন না যা কেবল বৈষম্য সৃষ্টি করবে। দেশকে ফুটিয়ে তোলা যাবে না।’
অশ্বিনীর আইনজীবী সর্বোচ্চ আদালতকে যুক্তি দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করেন, দেশের সার্বভৌমত্ব বজায় রাখতে, ধর্ম, সংস্কৃতি ও মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রাখতে নাম বদলের কমিশন গঠনে সম্মতি দেওয়া উচিত।
এর জবাবে বিচারপতিরা বলেন, ‘আমাদের দেশে বারবার বিদেশি শক্তি হানা দিয়েছে। এটা সত্যি। কিন্তু সেটাও ইতিহাসের অঙ্গ। সেই ইতিহাস জনপদ, রাস্তা বা সৌধের নাম পাল্টে মুছে ফেলা যায় না।’