করোনা মোকাবিলায় বাইডেনের ‘যুদ্ধকালীন’ পরিকল্পনা, ১০ নির্বাহী আদেশে সই
সামনের মাসেই যুক্তরাষ্ট্রে নভেল করোনাভাইরাসে মোট মৃত্যু পাঁচ লাখ ছাড়ানোর আশঙ্কা করছেন জো বাইডেন। তাই দেশটির কোভিড বাস্তবতাকে ‘যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি বলে বিবেচনা করা হচ্ছে’ বলে জানিয়েছেন নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রকে জনজীবন ওলটপালট করে দেওয়া মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে শপথের দ্বিতীয় দিনে ১০ দফা নির্দেশনার এক নির্বাহী আদেশে সাক্ষর করেছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। মূলত টিকাদান ও নমুনা পরীক্ষা ব্যাপকহারে বৃদ্ধি এবং মাস্কসহ জরুরি পণ্যের উৎপাদন বাড়ানো হবে। বিবিসির খবরে এসব কথা জানানো হয়েছে।
জো বাইডেন বলেছেন, ‘এটাকে যুদ্ধাবস্থার মতো পরিস্থিতি বলে বিবেচনা করা হচ্ছে। কারণ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের চেয়েও এই মহামারিতে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এই মহামারি রুখতে হয়তো কয়েকমাস লেগে যাবে। তবে নির্দেশনা অনুযায়ী আমেরিকানরা সবাই বুঝে চললে পরিত্রাণ মিলতে পারে।’
আগামী ১০০ দিনের মধ্যে স্কুল খোলার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। আর এই সময়ের মধ্যে অন্তত ১০ কোটি মানুষকে দেওয়া হবে করোনার টিকা। এজন্য স্টেডিয়াম ও কমিউনিটি কেন্দ্রগুলোকে টিকাদান কেন্দ্র বানানো হবে।
আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের যুক্তরাষ্ট্রে যেতে করোনা নেগেটিভ সনদ লাগবে এবং যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকেই ১৪ দিনের সেল্ফ কোয়ারেন্টিন পালন করতে হবে।
সবার ওপরে রাখা হয়েছে পূর্বঘোষিত মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্বের নীতি। বিমানবন্দর, ট্রেন, বাস স্টেশনে ও সব সরকারি স্থাপনা এবং প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গণে মুখ ঢেকে রাখা বাধ্যতামূলক হচ্ছে।
মহামারি মোকাবিলায় অঙ্গরাজ্য ও স্থানীয় কর্মকর্তাদের হাতে আরো বেশি বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। জাতীয় পর্যায়ে একটি নতুন অফিসও করা হবে পুরোটা দেখভালের জন্য।
টিকা ও ব্যক্তিগত সুরক্ষাপন্য উৎপাদনে প্রতিরক্ষা উৎপাদন আইনের ব্যবহার করার কথা বলা হয়েছে। ট্রাম্পও গত বছর এই আইনের ব্যবহার করেন।
প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশ কংগ্রেসে পাস হওয়া লাগে না। তবে এই নির্দেশনা বাস্তবায়নের অধিকাংশ অর্থ আসবে বাইডেনের বিশালাকার এক দশমিক ৯ ট্রিলিয়ন ডলারের প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে। ওই প্রণোদনা প্যাকেজ কংগ্রেসের উভয় কক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস ও সিনেটে পাস হতে হবে।
‘শক্ত বাস্তবমুখী পদক্ষেপ’ নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে বাইডেন বলেন, ‘এটা সস্তায় হবে না। পরিস্কার করে বলতে চাই, পরিস্থিতি ভালো না হওয়া পর্যন্ত ব্যাপক কড়াকড়ি থাকবে।’
বাইডেন জাতীয়ভাবে নীতি নির্ধারণ ও বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। জাতীয়ভাবে কার্যক্রম পর্যবেক্ষণে একটি অফিসও খোলা হচ্ছে। অন্যদিকে, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অঙ্গরাজ্য সরকারের ওপর ভালো-মন্দ সিদ্ধান্তের এখতিয়ার দিয়ে রেখেছিলেন। করোনা নিয়ন্ত্রণে ট্রাম্পকে ব্যর্থ হিসেবেই সমালোচনা করছেন অনেকেই।
এ পর্যন্ত করোনায় যুক্তরাষ্ট্রের চার লাখ ছয় হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এতে আক্রান্ত হয়েছে প্রায় দুই কোটি ৪৫ লাখ মানুষ।