কর্নাটকে কংগ্রেসের কাছে ধরাশায়ী বিজেপি
আগামী বছর ভারতে জাতীয় নির্বাচন। এই নির্বাচনেও জয়ী হওয়ার আশা দেখছে দেশটির ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। তবে, নির্বাচনের আগের বছরই জোরেশোরে ধাক্কা খেল ক্ষমতাসীনরা।
ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কর্ণাটকে বিধানসভা নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের কাছে ধরাশায়ী হয়েছে তারা। আজ শনিবার (১৩ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে লন্ডনভিত্তিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স।
চলতি বছরে ভারতের পাঁচটি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই নির্বাচনগুলোকে আগামী বছরের জাতীয় নির্বাচনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে ধরা হচ্ছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘মোদি’ সারনেম মানহানি মামলায় গত মার্চে সংসদ সদস্যের পদ হারিয়েছেন কংগ্রেসের রাহুল গান্ধী। এই ঘটনার পর এটিই ভারতের প্রথম নির্বাচন।
বিজেপি শাসিত কর্নাটকে গত বুধবার ভোটগ্রহণ হয়। আর আজ সকাল থেকে ভোট গণনা শুরু হয়। এতে এ পর্যন্ত ১৩৭টি আসন পেয়ে সবার ওপরে রয়েছে ভারতের সবচেয়ে পুরনো রাজনৈতিক দল কংগ্রেস। ২০১৮ সালের নির্বাচন থেকে ৫৭টি আসন বেশি পেয়েছে তারা। অন্যদিকে, ক্ষমতাসীন বিজেপি আগের নির্বাচনের চেয়ে ৩৯টি আসন কম পেয়ে এবার পেয়েছে ৬৫টি আসন। জেডিএস জয়ী হয়েছে ১৯টি আসনে। স্বতন্ত্র ও স্থানীয় দলের চারজন প্রার্থী জিতেছেন এই নির্বাচনে।
কর্নাটকে বিধানসভা নির্বাচনে মোট আসন সংখ্যা ২২৪টি। এর মধ্যে এককভাবে ১১৩টি আসন পেলে জয়ী হবে কোনো দল।
২০১৪ সালে প্রথম ভারতের ক্ষমতায় আসে বিজেপি। এরপর থেকে যেকোনো নির্বাচনে ভরাডুবি হচ্ছিল কংগ্রেসের। আজকের জয় বাদ দিলে ২০১৯ সালের জাতীয় নির্বাচনের পর থেকে এ পর্যন্ত ২৪টি রাজ্যের মধ্যে মাত্র একটিতে জয় পেয়েছিল কংগ্রেস। অপরদিকে, বিজেপি জিতেছে ১৫টি রাজ্যের ভোটে।
কর্নাটকের এই পরাজয়কে বিরল বলে আখ্যা দেওয়া হচ্ছে, কারণ এখনও ভারতে বিপুল জনপ্রিয়তা রয়েছে মোদির। এমনকি মনে করা হচ্ছে ২০২৪ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় বসতে পারেন মোদি।
এদিকে, জয়ের খবরে কর্নাটকের রাজধানী বেঙ্গালুরুতে আনন্দ মিছিল ও বাজি-পটকা-আতশবাজি ফুটিয়ে নিজেদের জয়কে উদযাপন করছে কংগ্রেসের নেতাকর্মীরা। এমনকি কংগ্রেসের দিল্লির প্রধান কার্যালয়েও মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছে।
কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা রাহুল গান্ধী বলেন, ‘আমাদের দল কর্নাটকের গরিব জনগণের কথা বলেছে। আমরা এই ইস্যুটি নিয়ে লড়াই করেছি। আমরা এই লড়াইটি ঘৃণা বা কোনো ভুল শব্দ দিয়ে করিনি। ভালবাসার সঙ্গে ও খোলা হৃদয়ে আমরা লড়াই করেছি এবং কর্নাটকের মানুষ দেখিয়েছে, এই দেশের জনগণ ভালবাসা পছন্দ করে।’
সাড়ে ছয় কোটি মানুষের আবাসস্থল কর্নাটককে দক্ষিণ ভারতে বিজেপির প্রবেশদ্বার বলা হতো। কারণ, রাজ্যটিতে দলটির একক আধিপত্য ছিল।
এদিকে, পরাজয় মেনে নিয়ে কংগ্রেসকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে এক পোস্টে কর্নাটকের বিজেপির বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী বাসাভারাজ বোমাই লেখেন, ‘আমরা জনগণের রায় মেনে নিয়েছি। আমরা আমাদের ভুলগুলো বিশ্লেষণ করে সংশোধন করব এবং দল পুনর্গঠন করে সংসদ নির্বাচনে ফিরে আসব।’