কর্মী ছাঁটাই শুরু, টুইটারের বিরুদ্ধে মামলা
কর্মী ছাঁটাইয়ের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু করেছে টুইটার। ছাঁটাই ও প্রতিটি অফিস সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়টি ইমেইলের মাধ্যমে সব কর্মীকে জানিয়ে দেওয়া হবে। টুইটারের কর্তৃত্ব নেওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই কর্মী ছাঁটাইয়ের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন এলন মাস্ক।
টুইটার কর্তৃপক্ষ জানায়, স্থানীয় সময় আজ শুক্রবার (৪ নভেম্বর) সকাল ৯টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ১০টা) ই-মেইলের মাধ্যমে ছাঁটাইয়ের চূড়ান্ত বার্তা কর্মীদের জানিয়ে দেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক মেইলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটির পক্ষ থেকে বলা হয়, টুইটারকে স্বাভাবিক পথে নিয়ে যেতে আমরা বিশ্বব্যাপী কর্মী ছাটেইয়ের মতো কঠিন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি।
‘আপাতত কর্মীদের নিরাপত্তা, ব্যবস্থাপনা ও গ্রাহকদের তথ্য সংগ্রহের স্বার্থে আমাদের সবগুলো অফিস বন্ধ থাকবে। কেউ যদি অফিসের পথে রওনা দিয়ে থাকেন, তাহলে বাড়িতে ফিরে যান।’
প্রতিষ্ঠানটি আরও জানায়, যাদের ছাঁটাই করা হয়নি, তারা তাদের কর্মক্ষেত্রে ব্যবহৃত মেইলে বার্তা পাবেন। আর যাদের ছাঁটাই করা হয়েছে, তারা তাদের ব্যক্তিগত মেইলে পরবর্তী করণীয় সংবলিত বার্তা পাবেন।
এদিকে, এলন মাস্কের প্রায় অর্ধেক কর্মী ছাঁটাই করার পরিকল্পনার জন্য টুইটারের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। ক্যালিফোর্নিয়ার সান ফ্রান্সিসকো ফেডারেল আদালতে দায়ের করা ক্লাস-অ্যাকশন মামলার বরাত দিয়ে শুক্রবার ব্লুমবার্গ নিউজ এ খবর জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়, টুইটারের কর্মীরা বলছেন, কোম্পানিটি ফেডারেল ও ক্যালিফোর্নিয়ার আইন লঙ্ঘন করে পর্যাপ্ত নোটিশ ছাড়াই কর্মীদের বাদ দিচ্ছে।
মালিক হওয়ার আগেই এলন মাস্ক ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, তিনি প্রতিষ্ঠানটির অতিরিক্ত খরচ কমাতে চান ও কর্মীদের জন্য নতুন কর্মনীতি জারি করতে চান। তখনই বোঝা গিয়েছিল, অতিরিক্ত ব্যয় কমানোর অন্যতম উপায় হতে পারে কর্মী ছাঁটাই।
এলন মাস্ক মূলত টুইটারের বার্ষিক অবকাঠামো খরচ থেকে ১০০ কোটি ডলার সাশ্রয় করতে চান। এরই মধ্যে তিনি প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন।
গত সপ্তাহে ৪ হাজার ৪০০ কোটি ডলারে টুইটার কিনে নেন এলন মাস্ক। এরপর থেকেই প্রতিষ্ঠানটি ঢেলে সাজাতে তাঁর তৎপরতা শুরু হয়। এরই মধ্যে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) পরাগ আগারওয়াল, প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা নেড সিগাল, আইন ও নীতিমালাবিষয়ক প্রধান বিজয়া গাড্ডেকে সরিয়ে দিয়েছেন তিনি।
এর আগে টুইটারের পরিচালক ছিলেন ৯ জন। পরিচালনা পর্ষদ থেকে বিদায় নেওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন টুইটার বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ব্রেট টেলরও।
সারাহ পারসোনেট, যিনি প্রধান গ্রাহক কর্মকর্তা ও বিজ্ঞাপন কর্তা ছিলেন। মঙ্গলবার টুইটারে সারাহ জানিয়েছেন, তিনি গত সপ্তাহে পদত্যাগ করেছেন। কিভাবে মাস্কের অধীনে সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানি পরিবর্তন হবে তা নিয়ে বিজ্ঞাপনদাতাদের অনিশ্চয়তার কথাও তুলে ধরেন তিনি।
চিফ পিপল অ্যান্ড ডাইভারসিটি কর্মকর্তা ডালানা ব্র্যান্ড মঙ্গলবার লিংকডইন পোস্টে ঘোষণা করেছেন যে তিনিও গত সপ্তাহে পদত্যাগ করেছেন।
জেনারেল ম্যানেজার নিক ক্যাল্ডওয়েল টুইটারে তাঁর প্রস্থান নিশ্চিত করেছেন। সোমবার রাতের মধ্যে তার প্রোফাইল ‘সাবেক টুইটার কর্মকর্তা’ হিসেবে পরিবর্তন করেছেন তিনি।
প্রধান মার্কেটিং কর্মকর্তা লেসলি বার্ল্যান্ড, টুইটারের হেড অব প্রোডাক্ট জে সুলিভান ও এর গ্লোবাল সেলসের ভাইস প্রেসিডেন্ট জিন-ফিলিপ মাহেউও চলে গেছেন। তবে তারা পদত্যাগ করেছেন নাকি চলে যেতে বলা হয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট হওয়া যায়নি।