কানাডায় তীব্র দাবদাহ, ৬৯ জনের প্রাণহানি
তীব্র তাপদাহে কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া অঙ্গরাজ্যে সোমবার থেকে এ পর্যন্ত ৬৯ জনের হঠাৎ মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে সেখানকার পুলিশ। এদের বেশির ভাগই বয়োজ্যেষ্ঠ বলে জানা গেছে। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের দক্ষিণভাগজুড়ে রেকর্ড মাত্রায় দাবদাহ চলছে। যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে এমনটি জানানো হয়েছে।
টানা তৃতীয় দিনের মতো কানাডায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার লায়টনে ৪৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এ সপ্তাহের আগে কানাডার তাপমাত্রা কোনোদিনই ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পার হয়নি।
এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন এবং ওরেগন অঙ্গরাজ্যে ১৯৪০-এর দশকে তাপমাত্রা রেকর্ড রাখা শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে গত কয়েকদিনে। অরেগনের পোর্টল্যান্ডে ৪৬ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ওয়াশিংটনের সিয়াটলে ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় গত রোববার। বিদ্যুতের তার গলে যাওয়ার মতো তাপ দেখা দেওয়ায় পোর্টল্যান্ড স্ট্রিটকার সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
কানাডীয় পুলিশের তথ্য মতে, ব্রিটিশ কলাম্বিয়া অঙ্গরাজ্যের ভ্যানকুভারের বার্নাবি ও সারে উপশহরীয় অঞ্চলে ৬৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এঁদের বেশির ভাগই বয়োজ্যেষ্ঠ এবং নাজুক শারীরিক অবস্থায় ছিলেন। এসব মৃত্যুতে তাপপ্রবাহ সহযোগী ভূমিকা পালন করেছে বলে উল্লেখ করেছে পুলিশ।
কানাডীয় পুলিশের ভ্যানকুভারের বার্নাবি অঞ্চলে দায়িত্বরত কর্মকর্তা মাইক কালাঞ্জ বলেন, ‘সবাই প্রতিবেশীদের দিকে খেয়াল রাখুন, পরিবারের সদস্যদের খেয়াল রাখুন। বয়োজ্যেষ্ঠদের যাঁদের চেনেন, তাঁদের খোঁজ নিন। যাঁরা শারীরিকভাবে নাজুক অবস্থায় রয়েছেন, তাঁদের জন্য এই আবহাওয়া ভয়ানক। বিশেষ করে বয়স্কদের ক্ষেত্রে।’
কানাডার ইতিহাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হওয়া গ্রাম লায়টনের বাসিন্দা মেগান ফন্ড্রিচ কানাডার সংবাদপত্র গ্লোব অ্যান্ড মেইলকে বলেন, ‘বাইরে বের হওয়া একেবারেই অসম্ভব। অসহ্য আবহাওয়া। আমাদের এলাকা শুষ্ক থাকে। কিন্তু ৩০ ডিগ্রি আর ৪৭ ডিগ্রির তফাৎটা অনেক বেশি।’ নিজের মেয়েকে তিনি ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার অন্য অঞ্চলে পাঠিয়ে দিয়েছেন যেখানে তুলনামূলক তাপমাত্রা কিছুটা কম।
এরই মধ্যে ব্রিটিশ কলাম্বিয়া ও আলবার্টা অঙ্গরাজ্যজুড়ে এবং নর্থওয়েস্ট টেরিটরির সাসকাচওয়ান এবং ইউকনের একটি এলাকায় তাপ বিষয়ক জরুরি সতর্কতা জারি করেছে কানাডার পরিবেশ বিভাগ।