কেন মিয়ানমারের আশ্রয়প্রার্থীদের ফেরত পাঠাচ্ছে মালয়েশিয়া?
মালয়েশিয়া থেকে গত ৬ অক্টোবর একটি ফ্লাইটে করে মিয়ানমারের ১৫০ আশ্রয়প্রার্থীকে নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
যাদের মধ্যে কিয়াও হ্লা নামে এক রাখাইন তরুণও রয়েছেন। যিনি মিয়ানমার নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ছিলেন এবং গত বছর বাহিনী ছেড়ে পালিয়ে মালয়েশিয়া চলে গিয়েছিলেন।
ফ্লাইটে নৌবাহিনী ত্যাগ করে পালিয়ে যাওয়া আরও পাঁচ কর্মকর্তাও ছিলেন। কিয়াও হ্লাকে মিয়ানমার ফেরত পাঠানোর পর তিনি গ্রেপ্তার হন এবং বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। অন্যদের ভাগ্যে কী ঘটেছে, বিবিসি তা এখনও নিশ্চিত হতে পারেনি।
সম্প্রতি আরও বেশ কয়েকটি ফ্লাইটে করে মালয়েশিয়া থেকে মিয়ানমারের আশ্রয়প্রার্থীদের ফেরত পাঠানোর খবর দিয়েছে বিবিসি। যদিও মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে খুব বেশি তথ্য দিচ্ছে না।
তবে কুয়ালালামপুরে মিয়ানমারের দূতাবাস থেকে তাদের ফেইসবুক পাতায় মিয়ানমারের অবৈধ নাগরিকদের ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নিয়ে নিয়মিত পোস্ট করা হয়। পোস্টের ছবিগুলোতে স্পষ্টতই হাসিখুশি যাত্রীদের দেখা যায়। মিয়ানমারের দূতাবাসের কর্মীদের সঙ্গে মালয়েশিয়ার অভিবাসন কর্মকর্তাদের ছবিও সেখানে আছে।
মালয়েশিয়া সরকারিভাবে শরণার্থীদের স্বাগত জানায় না। দেশটি ‘ইউএন কনভেনশন অ্যান্ড প্রটোকল অন রিফিউজি’ চুক্তিতে সইও করেনি।
যে আশ্রয়প্রার্থীরা দেশে ফিরে গেল ঝুঁকিতে পাড়তে পারেন, তাদের শরণার্থী হিসেবে মর্যাদা দেওয়ার যে নিয়ম জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার রয়েছে, মালয়েশিয়া সেটিকেও স্বীকৃতি দেয় না।
তারপরও মালয়েশিয়া এক লাখ ৮৫ হাজার নিবন্ধিত শরণার্থী ও আশ্রয় প্রার্থীকে জায়গা দিয়েছে। অনিবন্ধিত শরণার্থীর সংখ্যা আরো অনেক বেশি এবং তাদের বেশিরভাগই মিয়ানমারের নাগরিক।
মিয়ানমার ও বাংলাদেশের শরণার্থী ক্যাম্প থেকে যাওয়া প্রায় এক লাখ মুসলিম রোহিঙ্গা মালয়েশিয়ায় আশ্রয় নিয়ে আছে।
মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ফিল রবার্টসন বলেন, ‘মিয়ানমারে রোহিঙ্গা, চিন ও কাচিন আদিবাসীদের মতো ঝুঁকিতে থাকা সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর জন্য পছন্দের গন্তব্য মালয়েশিয়া।
সেখানে থাকা তাদের সম্প্রদায়ের লোকজন এবং তাদের নেটওয়ার্ক নবাগতদের সুরক্ষায় অনেক সহায়তা দেয়।’
অতীতে মালয়েশিয়া সরকার শরণার্থী ও আশ্রয়প্রার্থীদের নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামাত না। কিন্তু গত ছয় মাসে দেশটি মিয়ানমারের প্রায় দুই হাজার আশ্রয়প্রার্থীকে ফেরত পাঠিয়েছে বলে জানায় হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। এমনকী, তারা মিয়ানমার ফিরে গেলে কী ধরণের ঝুঁকির মধ্যে পড়েবে সেটাও বিবেচনা করা হয়নি বলে দাবি মানবাধিকার সংগঠনটির।