কে হচ্ছেন কংগ্রেসের পরবর্তী সভাপতি, অশোক গেহলট নাকি শশী থারুর
ভারতের রাজনীতিতে কোণঠাসা হয়ে পড়া উপমহাদেশের অন্যতম পুরোনো রাজনৈতিক দল কংগ্রেসের নেতৃত্বে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে। ২০ বছরের বেশি সময় পর গান্ধী পরিবারের বাইরের কেউ দলটির সভাপতি হতে পারেন। এখন পর্যন্ত নেতৃত্বের এই লড়াইয়ে রয়েছেন গান্ধী পরিবারের অনুগত অশোক গেহলট এবং সংস্কারপন্থী হিসেবে পরিচিত শশী থারুর।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, কংগ্রেসের সভাপতি পদে লড়ার ইচ্ছার কথা প্রথমে জানান সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শশী থারুর। গত ২৫ বছরের অধিকাংশ সময় এই পদে হয় সোনিয়া গান্ধী অথবা তাঁর ছেলে রাহুল গান্ধী ছিলেন।
শশী থারুর কংগ্রেসের আলোচিত সেই জি-২৩ গ্রুপ তথা ২৩ নেতার একজন, যাঁরা ২০২০ সালে কংগ্রেসের আমূল সংস্কার চেয়ে সোনিয়া গান্ধীর কাছে চিঠি লিখেছিলেন। দলের হতোদ্যম অবস্থার জন্য তাঁরা নেতৃত্বের নিষ্ক্রিয়তাকে দায়ী করেন।
বিদেশে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে ফিরেই গতকাল সোমবার বিকেলে সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করেন শশী থারুর। আগামী ১৭ অক্টোবরের দলীয় নির্বাচনে লড়তে তাঁর সম্মতি পান এই নেতা।
কয়েক ঘণ্টা পরই সভাপতি পদে অশোক গেহলটের প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা আসে। এতে জমে উঠে নেতৃত্বের লড়াই। রাজস্থানের এই মুখ্যমন্ত্রী গান্ধী পরিবারের একান্ত অনুগত হিসেবে পরিচিত। কিছুদিন আগেও তিনি রাহুল গান্ধীকে কংগ্রেসের সভাপতি পদে ফিরতে চাপ দিয়ে আসছিলেন। দলের বর্তমান নেতৃত্বের স্থিতাবস্থা ও রাহুলের ফেরার পক্ষে যাঁরা আছেন, তাঁদের সমর্থন পেতে পারেন অশোক গেহলট।
দলের যোগাযোগের দায়িত্বে থাকা কংগ্রেস আইনপ্রণেতা জয়রাম রমেশ বলেন, ‘যিনিই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান স্বাধীনভাবে করতে পারেন এবং তাঁকে স্বাগত জানাই। এটাই কংগ্রেস এবং রাহুল গান্ধীর ধারাবাহিক অবস্থান। এটা উন্মুক্ত, গণতান্ত্রিক এবং স্বচ্ছ প্রক্রিয়া। প্রতিযোগিতার জন্য কারও কাছ থেকে সম্মতি নেওয়ারও প্রয়োজন নেই।’
তিন দিনের মধ্যে সভাপতি পদে মনোনয়নপত্র দাখিল শুরু হবে। বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতার পদত্যাগের পটভূমিতে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সবশেষ এ তালিকায় আছেন জ্যেষ্ঠ নেতা গুলাম নবি আজাদ। তাঁকে অনুসরণ করে জম্মু-কাশ্মীরের অধিকাংশ নেতাই পদত্যাগ করেন।
সোনিয়া গান্ধী ১৯ বছর কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ২০১৭ সালে ছেলে রাহুলের হাতে দায়িত্ব ছেড়ে দেন। সাধারণ নির্বাচনে টানা দ্বিতীয়বার দলের ভরাডুবির পর রাহুল ২০১৯ সালে পদত্যাগ করেন।
এরপর অন্তর্বর্তী সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন সোনিয়া গান্ধী। তবে এতে সংকট এড়ানো যায়নি। একের পর এক রাজ্যসভা নির্বাচনে হারে দলটি। দাবি উঠে নেতৃত্বের ব্যাপক পরিবর্তন আনার।