ক্রেমলিনে ড্রোন হামলা : রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে নতুন মোড়!
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সরকারি দপ্তর ক্রেমলিনে বুধবার (৩ মে) ড্রোন হামলার জন্য ইউক্রেনের দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তুলেছে রুশ দপ্তর। তবে এসব অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছে কিয়েভ। খবর বিবিসি ও রয়টার্সের।
এই ঘটনার জন্য সরাসরি ইউক্রেনকে দায়ী করে মস্কো বলেছে, ভোররাতে চালানো এই হামলার উদ্দেশ্য ছিল পুতিনকে হত্যা করা। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মিখাইলো পোদোলায়েক দাবি করেছেন, ইউক্রেনজুড়ে সন্ত্রাসী হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছে রাশিয়া। পুতিনকে হত্যাচেষ্টার জন্য হামলা করা হয়েছে এমন অভিযোগ তুলে, প্রতিশোধ নেওয়ার অজুহাতে ইউক্রেনে তারা বড় হামলা করবে। যেমনটি গত বছর যুদ্ধ শুরুর আগে করা হয়েছিল। তার মতে, এটি রাশিয়ারই সাজানো কাজ।
বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পোদোলায়েক বলেছেন, রাশিয়া বা ক্রেমলিনে হামলা চালিয়ে ইউক্রেনের কোনো লাভ নেই। উল্টো এ বিষয়টি রাশিয়াকেই সুবিধা দেবে। কারণ তারা প্রচার করবে ইউক্রেনীয়রা রাশিয়ার ওপর হামলা চালিয়েছে। এ কারণে সেগুলো থামাতে রুশ বাহিনী ইউক্রেনীয়দের ওপর হামলা চালাচ্ছে।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া অপর এক সাক্ষাৎকারেও পোদোলায়েক বলেছেন, ক্রেমলিনে হামলার সঙ্গে ইউক্রেনের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
ক্রেমলিনে ড্রোন হামলার বিষয়টি রাশিয়ার একটি সাজানো নাটক উল্লেখ করে টুইটে পোদোলায়েক বলেছেন, ‘ক্রেমলিনের ওপর ড্রোন মানে এটি নিশ্চিত, রাশিয়া ইউক্রেনে বড় সন্ত্রাসী হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ কারণে প্রথমে ক্রিমিয়ায় একটি দলকে গ্রেপ্তার করা হলো। বলা হলো, তারা নাশকতার পরিকল্পনা করছে।’
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের এক বছর গড়ানোর পর উত্তেজনা প্রশমনের পরিবর্তে তাতে আরও গতি পেলো এই ড্রোন হামলার ঘটনায়। ফিনল্যান্ড সফরে থাকা ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদমির জেলেনস্কি বলেছেন, তারা মস্কোয় কোনো হামলা চালায়নি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে একটি ড্রোনকে উঁচু দেয়াল ঘেরা প্রাসাদের গম্বুজের উপর বিস্ফোরণের পর সেখানে আগুন জ্বলতে দেখা যায়। প্রাসাদের মূল ভবনের পেছনে ধোঁয়া উড়তেও দেখা গেছে ভিডিওতে।
অপরদিকে, রুশ প্রেসিডেন্টের দপ্তর থেকে বলা হয়েছে, ক্রেমলিন লক্ষ্য করে হামলায় দুটি ড্রোন ব্যবহৃত হয়েছিল। দুটিকেই ভূপাতিত করা হয়েছে। প্রাসাদের কোনো ক্ষতি হয়নি।
এই হামলায় পুতিনের কিছু হয়নি বলে জানিয়েছেন তার প্রেসসচিব দিমিত্রি পেসকভ। তাকে উদ্ধৃত করে রুশ বার্তা সংস্থা তাসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘সন্ত্রাসী এই হামলা রুশ প্রেসিডেন্টের কোনো ক্ষতি করতে পারেনি। তার নির্ধারিত কর্মসূচিগুলো অপরিবর্তিত রয়েছে, তিনি তাতে অংশও নিচ্ছেন।’
রাশিয়া টিভি জানিয়েছে, হামলার সময় প্রেসিডেন্ট পুতিন ক্রেমলিনে ছিলেন না।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মস্কোর যে স্থানে ড্রোন হামলা হয়েছে, সেখান থেকে ইউক্রেনের সবচেয়ে কাছের সীমান্তের দূরত্বও ২৫০ কিলোমিটার।
এই ড্রোন হামলাকে ‘পরিকল্পিত সন্ত্রাসী হামলা’আখ্যায়িত করে এজন্য ইউক্রেনকে চরম পরিণতি ভোগ করতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রুশ কর্মকর্তারা।