গ্যাস সরবরাহ আরও কমাল রাশিয়া, দিশেহারা ইউরোপ
রাশিয়ার গ্যাস সরবরাহ কমে যাওয়ায় জার্মানিসহ মধ্য ইউরোপের দেশগুলোতে গ্যাসের দাম লাফিয়ে বাড়তে শুরু করেছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, বুধবার ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ আরও কমিয়ে দিয়েছে রাশিয়া।
সামনে শীত মৌসুমে বাড়িঘর গরম রাখতে যে পরিমাণ গ্যাসের প্রয়োজন পড়বে তা কোথা থেকে পূরণ হবে তা নিয়ে এরই মধ্যে ইউরোপের দেশগুলোতে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
সমালোচকরা বলছেন, রাশিয়া তাদের গ্যাসকে ‘রাজনৈতিক অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করছে।
নর্ড স্ট্রিম ১ পাইপলাইন দিয়ে জার্মানিতে গ্যাস সরবরাহ করে রাশিয়া। এখন ওই পাইলাইন দিয়ে স্বাভাবিকের চেয়ে এক-পঞ্চমাংশ কম গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে।
জার্মানি তাদের মোট গ্যাস আমদানির ৫৫ শতাংশই আনে রাশিয়া থেকে। ওই গ্যাসের বেশিরভাগই আসে নর্ড স্ট্রিম ১ পাইপলাইন দিয়ে। বাকি গ্যাস ভূমিতে স্থাপন করা নানা পাইপলাইন দিয়ে সরবরাহ করা হয়।
রাশিয়ার জ্বালানি কোম্পানি গ্যাজপ্রম জার্মানিতে গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দেওয়ার ব্যাখ্যায় বলেছে, একটি টারবাইনের রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য তারা গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে।
তবে জার্মান সরকার বলছে, গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দেওয়ার পেছনে যান্ত্রিক কোনও কারণ নেই।
গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দিয়ে মস্কো ইউরোপের বিরুদ্ধে ‘গ্যাস যুদ্ধ’ শুরু করেছে বলে মনে করে ইউক্রেন। দেশটি বলছে, এ পদক্ষেপ মানুষের বিরুদ্ধে মস্কোর ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’।
রাশিয়ার গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দেওয়া অবশ্য যুক্তরাজ্যের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে না বলে জানিয়েছে বিবিসি। কারণ, দেশটি তাদের মোট গ্যাস আমদানির ৫ শতাংশেরও কম আনে রাশিয়া থেকে।
তবে যুক্তরাজ্য প্রভাবিত হবে অন্যভাবে। রাশিয়ার গ্যাস সরবরাহ কমে যাওয়ায় ইউরোপে গ্যাসের চাহিদা বাড়বে, যার জেরে বিশ্ববাজারে গ্যাসের দাম বেড়ে যুক্তরাজ্যও ভুক্তভোগী হবে।
যুক্তরাজ্যে বুধবার গ্যাসের দাম ৭ শতাংশ বেড়ে গেছে। গত বছরের তুলনায় এখন দেশটিতে গ্যাসের দাম ছয় গুণ বেশি। তবে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর যেভাবে একলাফে গ্যাসের দাম অনেকটা বেড়ে গিয়েছিল বর্তমানে তার চেয়ে কম আছে।
রাশিয়া গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দেওয়ায় পরিস্থিতি মোকাবেলায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন গ্যাসের ব্যবহার কমাতে একমত হয়েছে। এখন ইইউর সদস্যরা স্বেচ্ছায় অগাস্ট থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত গ্যাসের ব্যবহার ১৫ শতাংশ কমিয়ে আনতে একমত হয়েছে।
ইইউ বলেছে, এই চুক্তির লক্ষ্য শীতের আগে গ্যাস সঞ্চয় করা। সদস্যদের সতর্ক করে দিয়ে ইইউ বলেছে, রাশিয়া ক্রামগত ইউরোপে তাদের জ্বালানি সরবরাহকে ‘অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করছে’। সরবরাহ সংকট পর্যায়ে পৌঁছালে স্বেচ্ছাসেবী চুক্তি বাধ্যতামূলক হয়ে যাবে।