চিকিৎসায় গাঁজার বৈধতা চেয়ে আবেদন, যা বললেন ইন্দোনেশিয়ার আদালত
চিকিৎসার প্রয়োজনে গাঁজার ব্যবহার বৈধ করতে ইন্দোনেশিয়ার সাংবিধানিক আদালতে রিভিউ আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু, আদালত আজ বুধবার দেশটির মাদকদ্রব্য আইনের ওই রিভিউ খারিজ করে দিয়েছেন। নয় জন বিচারকের একটি প্যানেল আজ এ রায় দেন। খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।
ওই রিভিউ গৃহীত হলে ইন্দোনেশিয়ায় চিকিৎসার প্রয়োজনে গাঁজার ব্যবহার বৈধ হওয়ার পথ প্রশস্ত হতো।
ইন্দোনেশিয়ায় সেরিব্রাল পালসিতে আক্রান্ত তিন শিশুর মা দেশটির একাধিক সুশীল সমাজ সংস্থার পৃষ্ঠপোষকতায় ২০২০ সালে সে দেশের কঠোর মাদকদ্রব্য আইনের বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার আবেদন করেন। তাঁরা সেরিব্রাল পালসির উপসর্গের চিকিত্সার জন্য গাঁজার ব্যবহারের পক্ষে যুক্তি দেন।
বিচারকেরা তাঁদের রায়ে বলেছেন—বাদীদের পক্ষে রায় দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত গবেষণা নেই। তবে বিচারকেরা সরকারকে ‘অবিলম্বে’ চিকিৎসায় মাদকদ্রব্যের ব্যবহার নিয়ে গবেষণা করার আহ্বান জানান।
বিচারক সুহার্তোয়ো বলেন, ‘আদালত জোর দিয়ে বলতে চায় যে, সরকারকে অবিলম্বে বিষয়টি নিয়ে কাজ উচিত... যাতে করে নীতি-নির্ধারণী কাজে সে ফলাফল ব্যবহার করা যায়। যাতে করে এই আবেদনের মতো বিষয়গুলোতে প্রয়োজনে আইন পরিবর্তন করা সম্ভব হয়।’
বাদীরা তাঁদের আবেদনে যুক্তি দিয়েছিলেন যে, চিকিৎসার জন্য মাদকদ্রব্য ব্যবহারের অনুমতি না দেওয়া সাংবিধানিকভাবে নাগরিকদের স্বাস্থ্য পরিষেবা পাওয়া এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত উন্নতি থেকে উপকার পাওয়ার অধিকারের লঙ্ঘন।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ইন্দোনেশিয়ায় বিশ্বের অন্যতম কঠোর মাদকবিরোধী আইন বলবৎ রয়েছে। সে দেশে বিপুল মাদকদ্রব্য বহন করা বা পাচারের সাজা হিসেবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা মৃত্যুর বিধানও রয়েছে।
কিন্তু, সম্প্রতি বেশি আলোচনায় উঠে আসে একটি ঘটনায়। সেরিব্রাল পালসিতে আক্রান্ত ১৩ বছর বয়সি এক শিশুর মা জাকার্তার একটি ব্যস্ত সড়কে দাঁড়িয়ে চিকিৎসা-সংক্রান্ত গবেষণার জন্য গাঁজাকে বৈধ করার দাবি জানান।
৪৩ বছর বয়সি শান্তি ওয়ারাস্তুতি প্ল্যাকার্ড নিয়ে জাকার্তার জনাকীর্ণ সড়কে নেমে ভাইরাল হন। ওই প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল : ‘সাহায্য করুন, আমার সন্তানের চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত গাঁজা দরকার।’
ইন্দোনেশিয়ার পার্লামেন্ট সম্প্রতি চিকিৎসায় ব্যবহৃত গাঁজা-সংক্রান্ত বিধি সংশোধনের বিষয়ে আলোচনা করেছে। চিকিৎসায় ব্যবহৃত গাঁজার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তৃত গবেষণা করা হবে বলে পার্লামেন্টে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এশিয়ার ওই অঞ্চলে চিকিৎসায় গাঁজার ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া প্রথম দেশ থাইল্যান্ড। দেশটি ২০১৮ সালে ওই অনুমোদন দেয় এবং চলতি বছর গাঁজা চাষ ও সেবনেরও অনুমোদন দিয়েছে।