চীনের হুঁশিয়ারি তোয়াক্কা না করেই তাইওয়ান যাচ্ছেন পেলোসি!
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি তাঁর এশিয়া সফরে তাইওয়ানে যাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তাইওয়ান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
চীনের হুঁশিয়ারি তোয়াক্কা না করেই চীনের সঙ্গে বিরোধপূর্ণ তাইওয়ান সফর করতে যাচ্ছেন ঘোর চীনবিরোধী হিসেবে পরিচিত ন্যান্সি পেলোসি। এমনকি জো বাইডেনের প্রশাসনও চাইছেন না পেলোসি তাইওয়ানে যান। বাইডেন কিছুদিন আগে সাংবাদিকদের বলেন, ‘স্পিকারের তাইওয়ান সফর এ মুহূর্তে ঠিক হবে না বলে সামরিক বাহিনীও মনে করছে।’
এমনিতেই বর্তমানে চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক তলানিতে রয়েছে। এখন এমন পরিস্থিতিতে ২৫ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো মার্কিন হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের কোনো স্পিকার তাইওয়ানে যাচ্ছেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রের আনুষ্ঠানিক সফরসূচিতে তাইওয়ানের কথা বলা হয়নি। এশিয়া সফরে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানে যাওয়ার কথা রয়েছে মার্কিন হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের স্পিকারের। সফরের শুরুতে আজ সোমবার প্রথমে সিঙ্গাপুরে রয়েছেন পেলোসি।
তাইওয়ান সরকারের এক কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেছেন, ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ানে রাত্রিযাপন করতে যাচ্ছেন। তবে ঠিক কবে কখন তাইপেতে নামবেন পেলোসি, তা জানানো হয়নি।
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কর্মকর্তা সিএনএনকে জানান, মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের কর্মকর্তারা পেলোসির ওই অঞ্চলে সফরের সময় চীন কোনো ধরনের কর্মকাণ্ড চালায় কি না তেমন আশঙ্কা মাথায় রেখে তাঁর (পেলোসির) নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাতদিন কাজ করছেন।
অন্যদিকে, পেলোসি তাইওয়ান সফর করলে পরিণতি ভোগ করতে হবে যুক্তরাষ্ট্রকে। এমন হুমকি আগেই দিয়ে রেখেছিল চীন। গতকাল রোববারও ফের চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ নিয়ে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রকে আমরা বলতে চাই, চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না। চীনের সার্বভৌমত্ব এবং ভৌগলিক একাগ্রতা রক্ষায় অবশ্যই সমুচিত ব্যবস্থা নেবে।’
সোমবার তাইওয়ানের প্রধানমন্ত্রী সু সেং-চ্যাং বলেন, ‘সবসময়ই আমরা বিদেশি সম্মানিত অতিথিদেরকে আমাদের দেশে স্বাগত জানাই।’ তবে আগামী বৃহস্পতিবার পেলোসি তাইওয়ানে যেতে পারেন বলে যে গুঞ্জন স্থানীয়ভাবে ছড়িয়েছে সে প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে তিনি সরাসরি কোনো কথা বলেননি।
চীন তাইওয়ানকে তার নিজের বিচ্ছিন্ন প্রদেশ মনে করে; কোনো একদিন প্রদেশটি মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে একত্রিত হবে বলেও মনে করে চীনা শাসকশ্রেণি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট এবং ভাইস প্রেসিডেন্টের পর দেশটির তৃতীয় ক্ষমতাধর ব্যক্তি ন্যান্সি পেলোসি। চীনের হুঁশিয়ারি অগ্রাহ্য করে যদি তিনি তাইওয়ান সফর করেনই, তাহলে ১৯৯৭ সালের পর স্বশাসিত দ্বীপটিতে যাওয়া সবচেয়ে উচ্চপদস্থ মার্কিন রাজনীতিক হবেন তিনি। ন্যান্সি পেলোসির ৩৫ বছরের ক্যারিয়ারে তাঁকে সবসময়ই চীনের কট্টর সমালোচক হিসেবেই দেখা গেছে।