চীন-রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউরোপে আরও কড়া অবস্থানের ডাক
ফ্রান্সে চীনা রাষ্ট্রদূতের বিতর্কিত মন্তব্যের পর সে দেশের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থানের ডাক বাড়ছে৷ রাশিয়ার ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা চাপানো এবং ইউক্রেনকে আরও সামরিক সাহায্য দেওয়ার উদ্যোগও চলছে৷
শুধু যুদ্ধক্ষেত্রে নয়, কূটনৈতিক পর্যায়েও ইউক্রেনকে কেন্দ্র করে পশ্চিমা বিশ্ব এবং রাশিয়া ও তার সমর্থকদের মধ্যে সংঘাত চলছে৷ ফ্রান্সে চীনের রাষ্ট্রদূত সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে সৃষ্টি হওয়া অনেক রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলায় বিষয়টি আরও জটিল হয়ে উঠেছে৷ ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার হামলার নিন্দা না করে উল্টো নীতিগতভাবে মস্কোর পাশে দাঁড়ানোর জন্য পশ্চিমা বিশ্বে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়ছে চীন৷
সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর যেসব রাষ্ট্র আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এবং জাতিসংঘে নিজস্ব আসন পেয়েছে, সেগুলোর মধ্যে কয়েকটি ইতোমধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পূর্ণ সদস্য এবং ইউক্রেনের মতো কিছু দেশ ভবিষ্যতে সেই স্বপ্ন দেখছে৷ ফলে চীনের রাষ্ট্রদূতের বিতর্কিত মন্তব্যের পর একযোগে চীনের বিরুদ্ধে ইইউর কড়া অবস্থান নেওয়ার ডাক জোরালো হচ্ছে৷
লুক্সেমবুর্গে ইইউ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনে এ বিষয়ে জোরালো বিবৃতির প্রত্যাশা করা হচ্ছে৷ ফ্রান্স ও তিন সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র এস্তোনিয়া, লাটভিয়া ও লিথুয়েনিয়া চীনের কূটনীতিকের মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছে৷
ইইউ ইউক্রেনের জন্য যৌথভাবে ১০ লাখ গোলাবারুদ সরবরাহের বিষয়টিও চূড়ান্ত করার চেষ্টা করছে৷ এ বিষয়ে অভ্যন্তরীণ মতবিরোধ সম্পর্কে ইউক্রেন তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে৷ সে দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রি কুলেবা এক টুইট বার্তায় সেই বিলম্বের সমালোচনা করে লেখেন, এর ফলে ইউক্রেনের মানুষের জীবন বিপন্ন হচ্ছে৷ এছাড়া ইইউভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা রাশিয়ার ওপর একাদশ দফার নিষেধাজ্ঞার রূপরেখা স্থির করার লক্ষ্যেও আলোচনা করছেন৷
শিল্পোন্নত দেশগুলোর গোষ্ঠী জি-সেভেন যদি সত্যি রাশিয়ায় প্রায় সব রকম রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা চাপায়, সে ক্ষেত্রে পালটা পদক্ষেপ হিসেবে রাশিয়া কৃষ্ণসাগর দিয়ে ইউক্রেন ও রাশিয়ার খাদ্যশস্য রপ্তানি সংক্রান্ত চুক্তি বাতিল করবে বলে হুমকি দিয়েছেন রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ৷ আগামী ১৮ মের পর সেই চুক্তির মেয়াদ আর বাড়ানো হবে না বলে রাশিয়া ইঙ্গিত করছে৷
লাটভিয়া গত বছর রাশিয়ার সার বাজেয়াপ্ত করার পর মস্কো কড়া অবস্থান নিচ্ছে৷ জি-সেভেন অবশ্য রোববারই সেই চুক্তি সম্পূর্ণ কার্যকর করার এবং আরও সম্প্রসারণের ডাক দিয়েছে৷
রুশ দখলদার বাহিনীর হাত থেকে আরও জমি পুনরুদ্ধার করতে ইউক্রেন বড় অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে বেশ কিছুকাল ধরে শোনা যাচ্ছে৷ সোমবার সকালে রুশ অধিকৃত ক্রাইমিয়া উপদ্বীপে সেভাস্তোপোল বন্দরে দুটি ড্রোন হামলা বানচাল করা সম্ভব হয়েছে বলে শহরের মস্কো নিযুক্ত গভর্নর দাবি করেছেন৷ ক্রাইমিয়ার ওপর হামলা ইউক্রেনের পাল্টা সামরিক অভিযানের অংশ কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়৷