জেলেনস্কিকে বাখমুত শহর ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান ওয়াগনার প্রধানের
রুশ সেনা ও ভাড়াতে যোদ্ধাদের বৃষ্টির মতো গোলাবর্ষণে ইউক্রেনের অবরুদ্ধ শহর বাখমুতে প্রবেশের শেষ পথটিও আটকে দিয়েছে রাশিয়া আর এর মাধ্যমে যুদ্ধের সবচাইতে রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ে গত ছয় মাসের মধ্যে মস্কো প্রথমবার একটি পরিষ্কার বিজয় অর্জনের কাছাকাছি পোঁছে গেছে।
গতকাল শুক্রবার ওয়াগনার (রাশিয়ার ব্যক্তিগত ভাড়াটে সেনার দল) প্রধান বলেছেন, পূর্বাঞ্চলীয় লবণ খনির শহরটি ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে আর তা পুরোপুরি ঘিরে ফেলার কারণে ইউক্রেনের সৈন্যদের জন্য মাত্র একটি পথই খোলা রয়েছে।খবর আলজাজিরার।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বাখমুত শহর থেকে পশ্চিম দিকে যাওয়ার পথটিতে ব্যাপক গোলাবর্ষণ চালিয়েছে রাশিয়া যাতে করে ইউক্রেনের সৈন্যরা শহরটির থেকে বের হতে ও প্রবেশ করতে না পারে। এছাড়া রুশ ট্যাঙ্কের গোলাবর্ষণে পাশের শহরের একটি সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তবে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাট মেরামতের কাজ করছে ইউক্রেনের সৈন্যরা এবং আরও সৈন্য যুদ্ধ ক্ষেত্রের দিকে যাচ্ছে যার অর্থ হচ্ছে দেশটি এখনই শহরটি ছেড়ে দিচ্ছে না। বাখমুত থেকে পশ্চিমে ইউক্রেনের সেনারা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার অংশ হিসেবে নুতন করে পরিখাও খুঁড়ছে।
ইউক্রেনের স্থল বাহিনীর কমান্ডার ওলেকসান্দ্র সিরস্কি গতকাল শুক্রবার (৩ মার্চ) শহরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদারে স্থানীয় কমান্ডারদের নির্দেশনা দিতে বাখমুত পরিদর্শন করেছেন।
এদিকে, বাখমুত শহর কব্জা করতে পারলে এই শীতে তা হবে রাশিয়ার জন্য একটি মূল্যবান ও বিরাট পুরস্কার। তারা জানিয়েছে, এই যুদ্ধে রাশিয়ার অন্যতম লক্ষ্য পার্শ্ববর্তী ডনবাস অঞ্চল দখল করতে তা হবে প্রাথমিক পদক্ষেপ।
ইউক্রেন বলছে, ক্ষয়ক্ষতির ওপর নির্ভর করে যুদ্ধের ধারা নির্ধারণ করতে বাখমুত শহরের আলাদা কৌশলগত মূল্য রয়েছে। ২০২২ সালের দ্বিতীয় ভাগে ইউক্রেন এই ভূখন্ডের বেশ কিছু এলাকা পুনর্দখল করে নেয় এবং গত তিন মাস ধরে তারা তা রক্ষায় যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে।
অন্যদিকে, সামরিক পোশাকে টেলিগ্রামে এক ভিডিও বার্তায় ওয়াগনার প্রধান ইয়েভগানি প্রিগোঝিন বলেছেন, বেসরকারি সামরিক যোদ্ধাদের ইউনিটগুলো মূলত বাখমুত ঘিরে রেখেছে। প্রিগোঝিন বলেন, ‘বের হওয়ার মাত্র একটি রাস্তাই আছে, সাঁড়াশির মতো চেপে ধরা হচ্ছে শহরটিকে।’
ওই বক্তব্যে ওয়াগনার প্রধান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে তার সৈন্যদের জীবন বাঁচাতে বাখমুত থেকে পিছু হটার আহ্বান জানান। এসময় ক্যামেরা ঘুরিয়ে দেখানো হয় ইউক্রেনের তিনজন বন্দিকে যারা বাড়ি ফিরে যাওয়ার আবেদন জানাচ্ছিলেন।
বাখমুত যুদ্ধে দুপক্ষই ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কথা জানিয়েছে। ইউক্রেন জানিয়েছে তাদের সশস্ত্র বাহিনী এখনও শহরটি কব্জায় রেখেছে তবে তারা এটাও স্বীকার করেছে যে, এ সপ্তাহে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে গেছে।