জয় রাজনীতিতে আসবে কিনা সে সিদ্ধান্ত তার : প্রধানমন্ত্রী
ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে সরকারের অনেক ডিজিটাল উদ্যোগের নেপথ্যের উদ্যোক্তা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘তবে রাজনীতিতে আসার সিদ্ধান্তের বিষয়টি তার নিজের ওপর ও দেশের জনগণের ওপর ছেড়ে দেওয়াই সবচেয়ে ভালো হবে।’ ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী তাঁর ছেলের সক্রিয় রাজনীতিতে যোগ দেয়ার বিষয়টি এভাবেই খোলাসা করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেখুন... সে এখন একজন পরিণত মানুষ। বিষয়টি তাঁর ওপরই নির্ভর করছে, তবে সে দেশের জন্যই কাজ করছে। এই যে ডিজিটাল বাংলাদেশ আমরা নির্মাণ করেছি, এই সমস্ত স্যাটেলাইট বা সাবমেরিন ক্যাবল বা কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, এইসব ডিজিটাল সিস্টেম... এই সবই তার আইডিয়া থেকে এসেছে....আপনারা জানেন... সে আমাকে আমার কাজে সহায়তা করছে...সে এসব করছে কিন্তু কখনোই দলে বা মন্ত্রিত্বে আসার ব্যাপারে চিন্তাও করেনি।’
তবে তিনি দলের ঘটে যাওয়া অনেক ঘটনার মধ্য থেকে একটির উল্লেখ করে বলেন, ‘জয় যেন সক্রিয় রাজনীতিতে ভূমিকা রাখে সেজন্য নেতা-কর্মীদের ভেতর থেকে প্রচণ্ড চাপ তৈরি হয়েছিল।’ তিনি বলেন, ‘এমনকি আওয়ামী লীগের সম্মেলনে তাকে সক্রিয় করার দাবি উঠেছিল। সে সময় আমি তাকে বলেছিলাম মাইক্রোফোনের সামনে যাও, আর জানাও তুমি কি চাও। সে তাই করেছিল, সে বলেছিল, না, এই মুহূর্তে আমি দলে কোনো পদ চাই না। বরং যারা এখানে দলের জন্য কাজ করছে তারা পদ লাভ করুক। কেন আমি একটি পদ দখল করবো? আমি আমার মায়ের সঙ্গে আছি, দেশের জন্য কাজ করছি, আমি আমার মাকে সহায়তা করছি, সুতরাং এটাই আমি করবো। সে আসলে এভাবেই চিন্তা করেছে। এটা এমন নয় যে আমি তাকে করাতে চেয়েছি বা করতে বলেছি।’
সাক্ষাৎকারে জানতে চাওয়া হয়েছিল যে তিনি মনে করেন কিনা জয়কে রাজনীতিতে ডাকার সময় এসেছে। উত্তরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটা নির্ভর করছে জনগণের ওপর।’
তিনি আরো বলেন, ‘উত্তরাধিকারের রাজনীতি বাংলাদেশে কোনো ইস্যু নয়।’
সাক্ষাৎকারের একপর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি প্রণয়নে তাঁর বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকার কথা স্মরণ করে বলেন, “আমাদের পররাষ্ট্রনীতি খুবই পরিষ্কার। ‘সকলের প্রতি বন্ধুতা, কারও প্রতি শত্রুতা নয়’ যা আমার বাবা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতিসংঘে তাঁর দেয়া ভাষণে উপস্থাপন করেছিলেন। আর আমরা সেই আদর্শ অনুসরণ করছি। আর আমার লক্ষ্য জনগণের প্রতি...কিভাবে তাদের জীবনযাত্রার উন্নতি করা যায়....কিভাবে তাদের জীবনযাত্রার মান বাড়ানো যায়। আর আমি সবসময় বলে আসছি আমাদের একটাই শত্রু আর সেটা হলো দারিদ্র। আমাদের একসাথে কাজ করতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন যে তিনি অনুভব করেন উন্নত দেশগুলোকে সংলাপের মাধ্যমে সব বিতর্ক ও ভিন্নতার সমাধান করা উচিত। ‘আমি অনুভব করি, অবশ্যই আলোচনার মাধ্যম চীন ও ভারতের অমিমাংসিত সমস্যার সমাধান করা উচিত, তবে এবিষয়ে আমি নাক গলাতে চাই না। আমি আমার দেশের উন্নয়ন চাই আর নিকটতম প্রতিবেশি হিসেবে ভারতের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক রয়েছে। তবে এটা ঠিক যে আমাদের অনেক দ্বিপাক্ষিক সমস্যা রয়েছে আর আমরা অনেক সমস্যার সমাধান করছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার জন্য বাংলাদেশের উন্নয়নই প্রধান বিবেচ্য বিষয়, এক্ষেত্রে দেশের মানুষের উন্নয়নের জন্য যে কোনো বাইরের দেশের সাহায্য নিতে তিনি প্রস্তুত আছেন।