তারল্য সংকটে লেবাননের বাণিজ্যিক ব্যাংক, আমানত ফেরত দেওয়া নিয়ে শঙ্কা
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ লেবাননের আর্থিক সংকট নতুন কিছু নয়। দেশটিতে এই সংকট আরও বাড়ছে। লেবাননের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে তারল্য সংকট প্রকট হয়েছে। এমনকি আমানতকারীদের জমানো অর্থ ফেরত দেওয়া নিয়েও নতুন করে জেগেছে শঙ্কা। লেবাননের ব্যাংকিং অ্যাসোসিয়েশনের (এবিএল) সেক্রেটারি জেনারেলের বরাতে আজ বুধবার (৮ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।
এবিএল সেক্রেটারি ফাদি খালাফ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বলেছেন, ‘আমাদের ব্যাংকগুলোতে তীব্র আকারে তারল্য সংকট রয়েছে। আমানতকারীদের জমানো অর্থ ফিরিয়ে দেওয়ার মতো অবস্থায়ও নেই।’ তবে, এটিকে নিজস্ব মতামত বলে জানিয়েছেন ফাদি।
বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রতিমাসের তথ্য হালনাগাদের কাজ করে এবিএল। তাদের তথ্যানুযায়ী, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো লেবাননের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা করেছে আট হাজার ৬৬০ কোটি ডলার। যা জানুয়ারির ৩১ তারিখ পর্যন্ত ছিল মাত্র দুই কোটি চার লাখ ডলার।
চিঠিতে ফাদি লেখেন, ‘সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্যই বলছে, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে নগদ অর্থ নেই।’
রয়টার্স বলছে, লেবাননের অর্থনৈতিক দুরবস্থা নতুন নয়। দেশটির স্থানীয় মুদ্রা তার ৯৮ শতাংশ মান হারিয়েছে। এর ফলে দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছে দেশটির ৮০ শতাংশ নাগরিক।
লেবাননে অস্থিরতার সূত্রপাত হয়েছে মূলত ২০১৯ সালের অক্টোবরে। কয়েক দশকের দুর্নীতিগ্রস্ত সরকার, প্রফুল্লতা ব্যয় ও আর্থিক অব্যবস্থাপনার পর এই সংকট শুরু হয়। ওই সময় ব্যাংকগুলো ডলার উত্তোলনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। এমনকি অর্থ উত্তোলন ও লেনদেন নিয়ে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। তবে, দেশটির সরকার আজও পর্যন্ত মূলধন নিয়ন্ত্রণ আইন গৃহীত করতে পারেনি।
বিধিনিষেধের জেরে দেশটির জনগণের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম হয়। আর এই ক্ষোভ গিয়ে পড়ে অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর। তবে, এর জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রাজনৈতিক নির্দেশনাকে দায়ী করছে ব্যাংকগুলো।
গত লেবাননের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপপ্রধানমন্ত্রী সাদি ছামি বলেছিলেন, ‘সংকট কাটিয়ে উঠতে প্রথমে ব্যাংকগুলোকেই যেতে হবে।’ ধারণা করা হচ্ছে, সংকটের জন্য ব্যাংকগুলোর ক্ষতি হবে সাত হাজার ২০০ কোটি ডলার।
অর্থনৈতিক অবস্থা পুনরুদ্ধারে আইএমএফের কাছে ৩০০ কোটি ডলারের জন্য ধরনা দিচ্ছে লেবানন সরকার। তবে, আইএমএফের দাবি, প্রয়োজনীয় সংস্কার বাস্তবায়নে লেবাননের অগ্রগতি খুব ধীর।