তিন দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেবে ভারত
ভারত সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মতো মুসলিম অধ্যুষিত দেশ থেকে ভারতে চলে আসা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের (হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ও জৈন) শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হলো। গতকাল শুক্রবার এ সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারি করেছে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
জানা গেছে, এরই মধ্যে গুজরাট, রাজস্থান, ছত্তিশগড়, হরিয়ানা ও পাঞ্জাবের মোট ১৩ জেলায় বসবাসকারী অমুসলিম শরণার্থীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব পেতে আবেদন করার নির্দেশনা দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ভারতের নাগরিকত্ব আইন ১৯৫৫ এবং ২০০৯ সালে প্রণীত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) অধীনে এই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। তবে, এই বিজ্ঞপ্তি সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী নয়। মূলত ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনের আওতায় আবেদনকারীদের মধ্য থেকে যাচাই বাছাই করে ভারতের নাগরিক হিসেবে ঘোষণা করা হবে।
মূলত ভারতের প্রতিবেশী মুসলিম দেশগুলে থেকে আসা সংখ্যালঘুদের জন্য তৈরি নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন এখনও বলবৎ করা হয়নি। যার ফলে ভারতে এখনই কার্যকর হচ্ছে না সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ। মোদি সরকারের আশ্বাস সত্ত্বেও গত ফেব্রুয়ারি মাসে এই আইন কার্যকর করার সময়সীমা আরও বেড়েছে। চলতি বছরে এই আইন কার্যকর করার কথা ছিল। কিন্তু সেই সময়সীমা আরও তিন মাস বাড়িয়ে দেয় সংসদীয় কমিটি। বলা হয়েছে, ৯ এপ্রিল থেকে ৯ জুলাইয়ের মধ্যে কার্যকর করতে হবে এই নাগরিকত্ব আইন। ফলে অমুসলিম শরণার্থীদের নাগরিকত্ব পাওয়ার প্রক্রিয়া কার্যত থেমে গেছে।
তবে নাগরিকপঞ্জি আর সিএএ নিয়ে অনেকদিন ধরেই সরব বুদ্ধিজীবী মহল। ধর্মের ভিত্তিতে শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়া নিয়ে তুমুল প্রতিবাদ হয়েছে ভারতজুড়ে। পালটা বিজেপি বলেছে, মুসলিম দেশগুলোতে অত্যাচারিত হিন্দু, শিখ ও অন্য সংখ্যালঘুদের বাঁচাতেই এই আইন আনা হয়েছে।
মূলত, ২০১৯ সালের নাগরিকত্ব আইন পাশের পর থেকেই দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। ২০২০ সালেও সেই বিক্ষোভ অব্যাহত থাকে। ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) এর মাধ্যমে ভারতে আসা বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, জৈন, শিখ ও পার্সিদের সহজেই নাগরিকত্ব দেওয়া যাবে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ২০১৯-এর মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দু শরণার্থীদের চিহ্নিত করবে। ফলে ভারতে আসা অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করা সহজ হয়ে যাবে।
ভারতে ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর থেকে সিএএ কার্যকর হয়েছে। এদিকে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব অনিল মালিকের জারি করা এই নির্দেশিকায় বলা হয়েছিল, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ২০১৯, ধারা ১, উপধারা ২ মেনে ১০ জানুয়ারি ২০২০ থেকে আইন কার্যকর করা হলো। তবে পরবর্তী সময়ে করোনা সংক্রমণের কারণে সে প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়।