তুরস্কে ভূমিকম্প : ১০ প্রদেশে তিন মাসের জরুরি অবস্থা
তুরস্কে ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ১০টি প্রদেশে তিন মাসের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। এরদোয়ান বলেন, তুরস্কে ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৫৪৯ জনে। এ ছাড়া পার্শ্ববর্তী দেশ সিরিয়ায় এ ভূমিকম্পে ১ হাজার ৬০০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন। খবর বিবিসির।
তুরস্কের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে এরদোয়ান বলেন, ‘দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে উদ্ধারকাজ যেন দ্রুত সম্পন্ন করা যায়, সেটি নিশ্চিত করার জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হলো। এই পদক্ষেপের কারণে দুর্গত এলাকায় ত্রাণকর্মী ও সহায়তাকারীদের পৌঁছাতে সুবিধা হবে।’
এই জরুরি অবস্থা শেষ হবে দেশটিতে নির্বাচনের ঠিক আগে আগামী ১৪ মে। ২০১৬ সালে সেনা অভ্যুত্থানের ব্যর্থ চেষ্টার পর তুরস্কে সর্বশেষ জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছিল। দুই বছর পর তা প্রত্যাহার করা হয়েছিল।
তুরস্কে সোমবার ভোরে শুরু হয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দফায় দফায় আঘাত হানা ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকেপড়া ব্যক্তিদের উদ্ধারের জন্য সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কাজ করছেন উদ্ধারকর্মীরা। কারণ সময় যত বাড়ছে, তাদের জীবিত উদ্ধার হওয়ার সম্ভাবনা তত কমছে। এ ছাড়া দেশটিতে ভারী বৃষ্টি ও তুষারপাতের কারণে উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হচ্ছে।
এদিকে, হতাহতের সংখ্যা নাটকীয়ভাবে বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। জাতিসংঘ জানায়, ভূমিকম্প ও আফটারশকে নিহতদের মধ্যে কয়েক হাজার শিশু থাকতে পারে।
সর্বশেষ বিবৃতিতে তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এএফএডি) জানায়, দেশটিতে চার হাজার ৭০০টিরও বেশি ধ্বংস হওয়া ভবন থেকে আট হাজার জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
উদ্ধারকাজে সহায়তাকারী কুকুর ও সরঞ্জামসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে উদ্ধার তৎপরতায় সহায়তার জন্য বিশেষজ্ঞ দল পাঠানো হচ্ছে। কিন্তু ভূমিকম্পে তুরস্কের তিনটি বিমানবন্দরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে দেশটিতে সহায়তা পৌঁছানোর জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে। সিরিয়ায় এখন পর্যন্ত অন্তত ১ হাজার ৬০০ জন নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে। দেশটির কয়েক লাখ শরণার্থী তুর্কি সীমান্তবর্তী শিবিরে বাস করে।
তুরস্ক বিশ্বের অন্যতম ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলে অবস্থিত। ১৯৯৯ সালে ভূমিকম্পে দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ১৭ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল। এছাড়া ১৯৩৯ সালে ভূমিকম্পে পূর্বাঞ্চলীয় এরজিনকান প্রদেশে ৩৩ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।