তুরস্কে ভোট দিচ্ছেন প্রায় অর্ধকোটি নতুন ভোটার
তুরস্কে আজ রোববার (১৪ মে) প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচনের ভোট গ্রহণ চলছে। দেশটির স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় (বাংলাদেশ সময় বেলা ১১টা) ভোট গ্রহণ শুরু হয়, যা চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। এবারের নির্বাচনে ভোট দিতে পারবে ছয় কোটি ৪১ লাখ তুর্কি নাগরিক। এর মধ্যে নতুন ভোটার ৪৯ লাখ। আর বিদেশে অবস্থানরত ভোটার ১৭ লাখ ৬০ হাজার। খবর আনাদুলা এজেন্সির।
আজ সকাল থেকেই ভোট দিতে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভিড় করতে থাকে ভোটাররা। প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচনের ভোট দিয়েছেন ২০ বছর ধরে তুরস্কে আধিপত্য বজায় রাখা রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। ইস্তানবুলের উসকুদার ডিস্ট্রিক্টে নিজের ভোটটি দেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট। পরে, সাংবাদিকদের এরদোয়ান বলেন, ‘কোনো সমস্যা ছাড়াই ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষেরাও উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে ভোট দিচ্ছেন।’ এ সময় দেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যত ও গণতন্ত্রের জন্য শুভকামনা জানান তিনি।
সব নাগরিককে কোনো উদ্বেগ ছাড়াই ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে এরদোয়ান বলেছেন, ‘তুর্কি গণতন্ত্রের শক্তি প্রদর্শনের ক্ষেত্রে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
এদিকে, রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) নেতা ও প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী কেমাল কিলিকদারোগলু রাজধানী আঙ্কারার চানকায়া ডিস্ট্রিক্টের একটি কেন্দ্রে নিজের ভোটটি দিয়েছেন। ভোট দেওয়ার পর সাংবাদিকদের এই প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বলেন, ‘আমরা সবাই গণতন্ত্রের অভাব বুঝতে পেরেছি। জাতীয় ঐক্যের অভাব দেখতে পেয়েছি...আমি আশা করি, এই দেশে বসন্ত আসবে এবং বসন্ত সবসময় চলতে থাকবে।’ এ সময় ভোটারদের ধন্যবাদ জানান কিলিকদারোগলু।
অন্যদিকে, আরেক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী সিনান ওগান চানকায়া ডিস্ট্রিক্টে ভোট দিয়েছেন। ভোট দেওয়ার পর এই প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বলেন, ‘আসুন আমরা এই নির্বাচনটিকে একটি উৎসবের মতো করে পালন করি।’ এ সময় ভোটারদের ভোট দিতে যাওয়ার জন্য আহ্বান জানান সিনান।
আনাদুলা এজেন্সি জানিয়েছে, সকাল থেকেই ভোট দিতে কেন্দ্রে কেন্দ্রে যাচ্ছেন ভোটাররা। ভোটের জন্য সারাদেশে এক লাখ ৯১ হাজার ৮৮৫টি ব্যালট বাক্স স্থাপন করা হয়েছে। এবার নিবন্ধিত ভোটারের সংখ্যা ছয় কোটি ৪১ লাখেরও বেশি। এর মধ্যে বিদেশে অবস্থানরত ১৭ লাখ ৭৬ হাজার ভোটার তাদের ভোট দিয়ে দিয়েছেন। আর এবারের নির্বাচনে প্রথমবারের মতো ভোট দিচ্ছেন ৪৯ লাখ নতুন ভোটার।
নির্বাচনে একজন ভোটার দুটি করে ব্যালট পাবেন। একটি পার্লামেন্ট বাছাইয়ের জন্য ও অন্যটি প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর জন্য। নির্বাচনে জয়ীরা আগামী পাঁচ বছর দেশটির ক্ষমতায় থাকবে।
তুরস্কের এবারের নির্বাচনের এখন পর্যন্ত তিনজন প্রেসিডেন্ট প্রতিদ্বন্দ্বিতার লড়াইয়ে টিকে আছেন। তারা হলেন—জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (একে পার্টি) থেকে এরদোয়ান, রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) নেতা কিলিকদারোগলু ও সিনান ওগান। আজকের পার্লামেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে পাঁচ জোটের মাধ্যমে ৩০টিরও বেশি রাজনৈতিক দল এবং ১৫০ স্বতন্ত্র প্রার্থী।
তুরস্কের নির্বাচন অনুযায়ী, কোনো প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পেলে দ্বিতীয় ধাপে ভোট হবে। আর দ্বিতীয় ধাপের ভোট হবে ২৮ মে। ধারণা করা হচ্ছে, প্রথম ধাপের নির্বাচনে কোনো প্রার্থীই ৫০ শতাংশ ভোট পাবেন না। এর ফলে ভোট গড়াবে দ্বিতীয় ধাপে।
এদিকে, নির্বাচন দেশটির স্থানীয় সময় বিকেল ৫টায় শেষ হলেও রাত ৯টার আগে নির্বাচনের ফলাফলের বিষয়ে কোনো খবর প্রকাশ করা যাবে না, এমন আইন রয়েছে দেশটিতে।