দরিদ্র দেশগুলোর ওপর ৩৫ শতাংশ বেড়েছে ঋণের বোঝা : বিশ্ব ব্যাংক
২০২২ সালে বিশ্বের দরিদ্রতম দেশগুলোর নেওয়া মোট ঋণের পরিমাণ পৌঁছেছে ৬ হাজার ২০০ কোটি ডলারে। গত ২০২১ সালের চেয়ে চলতি বছর এই দেশগুলোর ঋণ নেওয়ার হার ৩৫ শতাংশ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্বের বৃহত্তম ঋণদাতা সংস্থা বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস।
এই ঋণের দুই তৃতীয়াংশই চীন সরবরাহ করেছে উল্লেখ করে বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটিতে আয়োজিত এক সেমিনারে বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘এই অর্থের অঙ্কটি বিশাল; আর এই পরিমাণ অর্থের যে সুদ— সেটিও অনেক উচ্চ। যেসব দেশ ঋণ নিয়েছে, তাদের বেশিরভাগেরই ঋণের কিস্তি পরিশোধ করার মতো সামর্থ্য নেই।’
‘আমি দুশ্চিন্তা বোধ করছি এ কারণে যে, ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে না পারা জনিত কারণে সামনের দিনগুলোতে অনেক দরিদ্র দেশ ঋণখেলাপি হওয়ার ঝুঁকিতে আছে। সেক্ষেত্রে বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধরনের সংকট শুরু হবে।’
‘আরও উদ্বেগের ব্যাপার হলো, দরিদ্র দেশগুলোতে যদি ঋণ ও অর্থসহায়তা দেওয়া বন্ধ হয়ে যায়—সেক্ষেত্রে সেসব দেশে মানবিক বিপর্যয় নেমে আসবে,’ যোগ করেন বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট।
আসন্ন এই সংকট সমাধানে তার নেতৃত্বে বিশ্ব ব্যাংকের একটি প্রতিনিধি দল চীনের সঙ্গে বৈঠকে বসবে বলে জানান ম্যালপাস। আগামী সপ্তাহে এই বৈঠক হওয়ার কথা আছে।
এ প্রসঙ্গে সেমিনারে তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে চীন বিশ্বের সবচেয়ে বড় ঋণদাতা দেশগুলোর মধ্যে একটি। ফলে সামনে যে বৈশ্বিক সংকট আসছে, তা থেকে নিস্তার পেতে চীনকে যুক্ত করা খুবই প্রয়োজন বলে আমরা মনে করছি। শুরু থেকেই বিশ্বব্যাংক বৈশ্বিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতার জন্য কাজ করছে, এবার আমরা চীনের সঙ্গে যুগপৎভাবে কাজ করতে চাই।’
নিউইয়র্ক সিটির ওই সেমিনারে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ঋণদাতা সংস্থা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শীর্ষ নির্বাহী ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা চীনের বৃহত্তম দুই বাণিজ্যিক ব্যাংক চায়না ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক এবং এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংক অব চায়নার কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
চীনের এই দুই ব্যাংক বিশ্বের বড় ঋণদাতা সংস্থাগুলোর মধ্যে অন্যতম। দেশের পক্ষে অধিকাংশ বৈদেশিক ঋণ এই দুটি ব্যাংকই সরবরাহ করে।