নতুন অস্ত্রের প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি বাখমুতে অগ্রগতির দাবি ইউক্রেনের
সর্বশেষ ছয় মাসের মধ্যে প্রথমবারের মতো পূর্বাঞ্চলীয় ছোট শহর বাখমুতে নিজেদের অগ্রগতির দাবি জানিয়েছে ইউক্রেন। তাদের দাবি, দেশটির বাহিনী শহরটিতে সামান্য অগ্রগতি পেয়েছে। একইদিনে দেশটি প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে দূরপাল্লার ড্রোন দিতে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ব্রিটেন। রুশ আগ্রাসন রুখতে এসব ড্রোন ব্যবহার করতে হবে দেশটি। আজ সোমবার (১৫ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে লন্ডনভিত্তিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স।
গত এক বছর ধরে বাখমুতে নিয়ন্ত্রণ নিতে রুশ বাহিনী ও ইউক্রেনীয় বাহিনীর মধ্যে তুমুল লড়াই চলছিল। গত সপ্তাহে রুশ বাহিনীকে পিছু হটতে বাধ্য করে ইউক্রেনীয় বাহিনী। গত নভেম্বরে দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খেরসনের নিয়ন্ত্রণ নেয় কিয়েভ। এরপর থেকে এ পর্যন্ত তাদের সবচেয়ে বড় সাফল্য বাখমুত।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টেলিগ্রামে এক পোস্টে ইউক্রেনের স্থল বাহিনীর কমান্ডার কর্নেল জেনারেল অলেক্সান্ডার সিরস্কি লেখেন, ‘বাখমুতের দিকে সৈন্যদের অগ্রগতি সেখানে আমাদের প্রতিরক্ষায় আক্রমণাত্মক পদক্ষেপের প্রথম সাফল্য। গত কয়েকদিন ধরে আমরা কঠিন পরিস্থিতিতেও এগিয়েছি। আমরা প্রমাণ করেছি, শত্রুদের ধ্বংস করতে আমরা সক্ষম।’
ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে চলা যুদ্ধে সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী ও দীর্ঘ লড়াই চলছে বাখমুতে। গত অর্ধবছর ধরে ছোট শহরটিতে প্রতিরক্ষামূলক অবস্থানে ছিল কিয়েভ। অন্যদিকে, শহরটির নিয়ন্ত্রণ নিতে নতুন করে সৈন্য পাঠিয়েছে রাশিয়া। একইসঙ্গে শহরটিতে নিজেদের যোদ্ধার সংখ্যাও বাড়িয়েছে রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধে অংশ নেওয়া ভাড়াটে দল ওয়াগনার গ্রুপ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ইউরোপের ভূখণ্ডে সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হয়েছে বাখমুতেই।
পূর্বাঞ্চলীয় শহরটিতে অবস্থান করা রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে কিয়েভ বাহিনী। চলতি বছরের শুরু পশ্চিমা দেশগুলো থেকে পাওয়া শত শত নতুন ট্যাংক বাখমুতে পাঠিয়েছে জেলেনস্কি প্রশাসন। ইউক্রেনীয় বাহিনীর লক্ষ্য, নিজেদের ষষ্ঠ অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া, যেটি কিনা, নিজেদের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করেছে মস্কো।
এদিকে, আজ লন্ডনে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের সঙ্গে দেখা করেছেন জেলেনস্কি। রোম, বার্লিন ও ফ্রান্স সফর শেষে লন্ডনে যান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। তিন দিনের এই সফরে ইউরোপের দেশগুলো থেকে নতুন করে অস্ত্র পাওয়ার প্রতিশ্রুতিও পেয়েছেন জেলেনস্কি।
এর আগে গত সপ্তাহে সুনাক প্রশাসন ইউক্রেনকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়ার কথা জানিয়েছে। এসব ক্ষেপণাস্ত্র ২০০ কিলোমিটার দূরে আঘাত হানতে সক্ষম। একইসঙ্গে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির পাইলটদের যুদ্দবিমান চালানোর প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা জানিয়েছে ব্রিটিশ সরকার।