নোবেল বিজয়ী মার্কিন অর্থনীতিবিদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ, তদন্ত শুরু
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট লুইয়ের ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয় ২০২২ সালে অর্থনীতিতে নোবেলজয়ী ফিলিপ ডিবভিগের বিরুদ্ধে আনা যৌন হয়রানির অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে। তবে, অভিযুক্ত অর্থনীতিবিদ ডিবভিগ বিষয়টিকে ‘পেশাদার প্রতিদ্বন্দ্বিতা’ বলে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন। খবর এবিসি নিউজের।
ডিবভিগ আরেক মার্কিন অর্থনীতিবিদ ডগলাস ডায়মন্ডের সঙ্গে ব্যাংক থেকে আকস্মিক টাকা তোলার হিড়িক (ব্যাংক রান) ঘটনাটি ব্যাখ্যা করে পরিচিতি লাভ করেন। ‘ব্যাংক ও অর্থনৈতিক সংকটগুলোর ওপরে গবেষণা’র জন্য তিনি ২০২২ সালের অক্টোবরে যৌথভাবে ডায়মন্ড ও বেন বারন্যাংকির সঙ্গে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।
তার আইনজীবী অ্যান্ড্রু মিলটেনবার্গ দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) বলেছেন, সেন্ট লুইয়ের ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ অফিসে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তাকে কয়েক দফা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ডিবভিগ দীর্ঘদিন ধরে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং ও ফিনান্সের অধ্যাপক।
মিল্টেনবার্গ বলেছেন যে অভিযোগগুলো ‘প্রকৃতপক্ষে ভুল।’
তার মন্তব্যের জন্য ইমেইলে তার সঙ্গে এপি থেকে যোগাযোগ করলে তিনি কোনো সাড়া দেননি।
ব্লুমবার্গ নিউজ জানিয়েছে যে, তারা এই ইমেলগুলো পর্যালোচনা করেছে। যে ইমেইলগুলোতে ডিবভিগের বিরুদ্ধে চতুর্থ অফিস ক্যাম্পাসের যৌন হয়রানির অভিযোগগুলো পরিচালনা করছে।
ব্লুমবার্গ অক্টোবর থেকে অন্তত তিন জন সাবেক ছাত্রকে ডিবভিগ-এর বিরুদ্ধে করা অভিযোগ নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, তাদের সাত জন সাবেক শিক্ষার্থীর একটি দল ডিবিভিগের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ আনা ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলেছেন। সাক্ষাত্কারে বেশিরভাগ নারীই নাম প্রকাশ না করার শর্তে কথা বলেছেন।
নোবেল ইকোনমিক সায়েন্সেস প্রাইজ কমিটির চেয়ারম্যান টোরে এলিংসেন ব্লুমবার্গকে বলেছেন যে রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস যারা পুরস্কারের তত্ত্বাবধান করে। এ ধরনের অভিযোগগুলো তদন্ত পরিচালনা করার জন্য তারা একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া আছে, তা নিশ্চিত করার জন্য রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।
এলিংসেন ব্লুমবার্গকে বলেছেন, ‘যতক্ষণ না ইউনিভার্সিটি প্রমাণ করতে পারবে না যে ডিবভিগ কোনো অপরাধ করেছে, আমি মনে করি আমরা ততক্ষণ তাকে তার মহান বৈজ্ঞানিক কৃতিত্বের একই রকম সম্মান করব।
নোবেল শান্তি পুরস্কার ও ফাউন্ডেশনও এপি থেকে পাঠানো ইমেল বার্তাগুলোর প্রতিক্রিয়া জানায়নি। শুক্রবার এপি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেইল ও ফোনে পাঠানো বার্তারও কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র জুলি ফ্লোরি ব্লুমবার্গকে বলেছেন যে তারা নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে মন্তব্য করে না, তবে যৌন অসদাচরণকে গুরুত্ব সহকারে নেয় এবং যে কোনও অভিযোগ তদন্ত করবে।
মিল্টেনবার্গ বলেছেন যে তিনি অভিযোগের সময় সম্পর্কে সন্দেহ পোষণ করেন।
উল্লেখ্য যে ডিবভিগের নামে পুরস্কার ঘোষণার পরে কিন্তু নির্ধারিত পুরস্কার অনুষ্ঠানের আগে অভিযোগগুলো করা হয়।
তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, এটি পেশাদার প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণে হয়েছে।’