পরবর্তী ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনাক?
কোভিড মহামারির বিধিনিষেধ ভেঙে পার্টির আয়োজনের অভিযোগ ওঠার পর থেকেই তোপের মুখে রয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তাঁর নিজের কনজারভেটিভ পার্টির সদস্যদের একাংশও চাইছেন তিনি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান। এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাজ্যের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে যাঁর নাম উঠে আসছে, তিনি ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনাক। সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়াডটকম ও আনন্দবাজার এ খবর জানিয়েছে।
কনজারভেটিভ পার্টির সদস্য ৪১ বছর বয়সি ঋষি সুনাক একজন মন্ত্রী পদমর্যাদার চ্যান্সেলর। ঋষির মা উষা সুনাক এবং বাবা যশবীর পাঞ্জাবি হিন্দু। তিন ভাইবোনের মধ্যে ঋষি সবার বড়। তাঁর বাবা যশবীর কেনিয়ায় এবং মা ঊষা তানজানিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ঋষির পূর্বপুরুষেরা ছিলেন ব্রিটিশশাসিত ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের। পরে তাঁরা পূর্ব আফ্রিকায় চলে যান। সেখান থেকে ১৯৬০ সালে তাঁরা সন্তানদের নিয়ে যুক্তরাজ্যে চলে আসেন এবং থিতু হন। ঋষির মা ছিলেন একজন ফার্মাসিস্ট এবং বাবা চিকিৎসক। ঋষির মা একটি ফার্মেসি চালাতেন। ঋষির জন্ম যুক্তরাজ্যেই।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করেছেন ঋষি। পরে ইনফোসিসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা নারায়ণ মূর্তির মেয়ে অক্ষতা মূর্তিকে বিয়ে করেন। দুই মেয়ে কৃষ্ণা ও আনুশকাকে নিয়ে ঋষি-অক্ষতার সংসার।
ঋষি ইয়র্কশায়ারের রিচমন্ডের আইনসভার সদস্য হিসেবে ২০১৫ সালে প্রথম ব্রিটিশ পার্লামেন্টে যোগ দেন। ব্রেক্সিট-এর সমর্থনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকায় তিনি দ্রুত সবার নজর কাড়েন। এ ছাড়া বরিস জনসনের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করার পেছনেও তাঁর বড় হাত ছিল।
ব্রেক্সিট নিয়ে গণভোটের সময় ঋষি বলেছিলেন, ‘যুক্তরাজ্যের শক্তিশালী ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে আমাদের উদ্যোগ ও উদ্ভাবনকে সমর্থন করা উচিত।’
মায়ের ছোট্ট দোকানে কাজ শুরু করে ঋষি পরবর্তীকালে নিজে হন ১০০ কোটি পাউন্ডের আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সংস্থার সহ-প্রতিষ্ঠা। রাজনীতিতে আসার আগে ঋষি ছোট ব্যবসায় বিনিয়োগের বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করেন।
এ ছাড়া ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাজ্যের একজন চ্যান্সেলর হিসেবে নিযুক্ত হওয়ার পরেও ঋষি আরেক দফা নজর কাড়েন।
তবে, প্রধানমন্ত্রীর হওয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষা আছে কি না, ২০২০ সালে ঋষির কাছে তা জানতে চাইলে তিনি বলেছিলেন, ‘অবশ্যই না। একজন প্রধানমন্ত্রীকে কী মোকাবিলা করতে হয়, তা আমি দেখেছি। আমার পক্ষে প্রধানমন্ত্রী হওয়া যথেষ্ট কঠিন কাজ।’
তবে, বর্তমান প্রেক্ষাপটে ঋষিকেই পরবর্তী ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখা যেতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই।