পর্তুগালে আবাসন সংকট, বন্ধ হচ্ছে গোল্ডেন ভিসা
আবাসন সংকটের মধ্যে পড়েছে ইউরোপের দেশ পর্তুগাল। এর জেরে বিতর্কিত ‘গোল্ডেন ভিসা’ স্কিম বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে দেশটির সরকার। একইসঙ্গে এয়ারবিএনবির (রুম-ফ্ল্যাট শেয়ারিংয়ের অ্যাপ) মতো নতুন সংস্থাকে লাইসেন্স না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) এসব সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার। খবর রয়টার্সের।
লন্ডন ভিত্তিক সংবাদ সংস্থাটি বলছে, পশ্চিম ইউরোপের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ পর্তুগাল। বর্তমানে দেশটিতে বাড়ির দাম কয়েক গুণ বেড়েছে। একইসঙ্গে বাড়ি ভাড়াও আকাশ ছোঁয়া হয়ে গেছে। ২০২২ সালে বাড়ি ভাড়া বেড়েছে ৩৭ শতাংশ। অন্যদিকে, পর্তুগালের রাজধানী লিসবনের ৫০ শতাংশ শ্রমিক প্রতি মাসে মাথাপিছু আয় করেছে এক হাজারেরও কম ইউরো।
দেশটির আবাসন প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, তুলনামূলক কম মজুরি ও সরকারি নীতির কারণে অনেক বিদেশি বিত্তশালী দেশটিতে বিনিয়োগ করছে। এতে করে বাড়ির দাম ও বাড়ি ভাড়া কয়েকগুণ বেড়েছে। ফলে, বাড়ি কেনা বা ভাড়া দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে দেশটির নাগরিকদের। একইসঙ্গে পর্তুগালের আট দশমিক তিন শতাংশের মূল্যস্ফীতি সমস্যাটিকে আরও বাড়িয়ে তুলছে।
পর্তুগালের প্রধানমন্ত্রী অ্যান্তনিও কোস্তা বলেছেন, ‘সমস্যাটি এখন আমাদের সব পরিবারের ওপর প্রভাব ফেলছে।’ সংকট মোকাবিলায় কোস্তা সরকার ৯০ কোটি ইউরোর একটি তহবিলের ঘোষণা করেছে। তবে কবে নাগাদ এটি কার্যকর হবে তা স্পষ্ট করা হয়নি। কোস্তা বলেছেন, ‘আগামী মাসে কিছু অর্থ ছাড়ের অনুমোদন দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে আইন প্রণেতারা ভোট দেবেন।’
তহবিল বাদেও ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি ব্যবস্থা চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন কোস্তা। তিনি বলেন, ‘সরকার বাড়িওয়ালাদের কর প্রণোদনা দেবে। এর ফলে পর্যটন খাতে ব্যবহৃত সম্পত্তিগুলো স্থানীয়দের ভাড়া দেওয়ার জন্য বাড়িতে রূপান্তরিত হবে।’
তবে, পর্তুগিজ সরকারের কর প্রণোদনার সমালোচনা করছে কোস্তার রাজনৈতিক বিরোধীরা। তারা বলছেন, বাড়ির মালিকদের কর প্রণোদনা তাদের লাভবান করবে। এতে সাধারণের কোনো লাভ হবে না, কারণ বাড়ির মালিকেরা আগে থেকেই লাভে রয়েছে।
এদিকে, লিসবন বাদেও পর্তুগালের অন্যান্য শহর ও গ্রামে এয়ারবিএনবির মতো অ্যাপগুলোর কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। আবাসন সংকটের কথা জানিয়ে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে কোস্তা বলেন, ‘এখন থেকে ভাড়াটিয়ারা বাড়ির মালিকের থেকে সরাসরি ভাড়া নিতে পারবেন। পাঁচ বছরের চুক্তি করতে পারবে তারা।’