পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ
পাকিস্তানের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদে বিরোধী জোটের আনা অনাস্থা ভোটে হেরে বিদায় নিয়েছে ইমরান খানের সরকার। নতুন সরকার গঠন করতে যাচ্ছে বিরোধী জোট। এরই ধারাবাহিকতায় আজ সোমবার পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) সভাপতি শাহবাজ শরিফ দেশটির ২৩তম প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলেন।
এর আগে জাতীয় পরিষদ থেকে ইমরান খানের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) আইনপ্রণেতারা গণপদত্যাগ করেন। এর পরপরই দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে ভোটাভুটি শুরু হওয়ার আগে পার্লামেন্ট থেকে ওয়াকআউট করেন তারা।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী পদের প্রতিদ্বন্দ্বী পিটিআইয়ের সমর্থিত শাহ মাহমুদ কোরেশি জাতীয় পরিষদ থেকে পিটিআইয়ের আইনপ্রণেতাদের গণপদত্যাগের ঘোষণা দেওয়ার পর তারা সংসদ বয়কট করেন। যে কারণে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী হলেন শাহবাজ শরিফ।
অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে দেশটির প্রধান নির্বাহী হিসেবে পিটিআই প্রধান ইমরান খানের সরকারের মেয়াদের অবসানের দুদিন পর পার্লামেন্টে এই ঘটনা ঘটেছে। সংসদের অধিবেশনে সাবেক পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও অংশ নিয়েছেন।
এর আগে, সোমবার দুপুরের পর দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের জন্য পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে জাতীয় পরিষদের অধিবেশন শুরু হয়। তেলাওয়াতের পর ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরি গত ৩ এপ্রিল সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ করে দেওয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন।
তিনি বলেন, ‘আদালত এই সিদ্ধান্তকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করেছে... এবং আমরা সবাই আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে বাধ্য। কিন্তু আমি আপনাদেরকে আমার আদেশের পেছনের কারণ জানাতে চাই।’ সুরি বলেন, একজন দায়িত্বশীল পাকিস্তানি এবং এনএর ডেপুটি স্পিকার হিসাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি।
এরপর তিনি ইমরান খান নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনে বিদেশি ষড়যন্ত্রের প্রমাণ আছে এমন একটি নথির কথা বলেন। আর এই নথি মন্ত্রিসভা, জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির বৈঠক এবং সংসদীয় নিরাপত্তা কমিটির বৈঠকে আলোচনা করা হয়েছিল বলে জানান তিনি।
পাক সংসদের এই ডেপুটি স্পিকার বলেন, ‘এবং এটি প্রমাণিত হয়েছে যে অনাস্থা প্রস্তাব একটি বিদেশি ষড়যন্ত্র।’
এর আগে, শনিবার দিনভর নানা নাটকীয়তা এবং মধ্যরাতে সংসদের স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের পদত্যাগের পর অনাস্থা ভোটে হেরে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদ হারান ইমরান খান। দেশটির ৩৪২ সদস্যের সংসদের ১৭৪ জনই ইমরান খানের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ায় ক্ষমতাচ্যুত হন তিনি।