পার্কে ককটেল বানাচ্ছেন ইউক্রেনের নারীরা
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যেদিন তাঁর সৈন্যদের ইউক্রেনে হামলার নির্দেশ দেন, সেদিন ইউক্রেনীয় শিক্ষিকা অরিনা ভেবে রেখেছিলেন—ক্লাস নেওয়া সেরে প্রথমে নাচের ক্লাসে, আর তারপর পার্টিতে যাবেন। তিন দিন পর এ ইংরেজি শিক্ষককে দেখা গেল—পার্কে মলোটভ ককটেল বানাচ্ছেন। খবর বিবিসির।
বিবিসির সাংবাদিক সারাহ রেইন্সফোর্ড বলেন, ‘অরিনাসহ কয়েক ডজন নারী পার্কে ঘাসের ওপর হাঁটু গেঁড়ে বসে কী যেন করছিলেন। দেখলাম, তাঁরা বোতল-বোমা বানানোর জন্য পলিস্টেরিনের টুকরো জমা করছেন, কাপড় ছিঁড়ে ছোট ছোট টুকরো করছেন।’
ইউরোপের বেশির ভাগ মানুষের কাছে এমন দৃশ্য অকল্পনীয়। তিন দিন আগে ইউক্রেনেও এমন দৃশ্য অচিন্তনীয় ছিল।
কিন্তু, সেই ইউক্রেনের নদী-তীরবর্তী নিপ্রো শহরবাসী এখন রুশ সেনার হামলা থেকে নিজেদের রক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।
অরিনার মুখ-চুল ততক্ষণে পলিস্টেরিনের সাদা ধুলোয় মাকামাখি। তিনি বলেন, ‘কেউ ভাবতেও পারেনি, সাপ্তাহিক ছুটির দিনটা এভাবে কাটবে। কিন্তু, এখন মনে হচ্ছে—যে কাজ করছি, সেটিই এখন একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ কাজ।’
‘কাজটা বেশ ভয়ের। আমার মনে হয়, আমরা বুঝতেও পারছি না, কী করছি। আসলে, আমাদের কিছু একটা নিয়ে ব্যস্ত থাকা দরকার, কিছু করা দরকার’, যোগ করেন অরিনা।
অরিনার খানিকটা দূরে কাজ করছিলেন এলেনা ও ইউলিয়া। তাঁরা জানালেন, সন্তানদের বাড়িতে দাদা-দাদির কাছে রেখে এখানে ককটেল বানাতে সাহায্য করতে এসেছেন।
কাজ না থামিয়ে এলেনা বলেন, ‘ঘরে বসে কিছু না করতে পারলে ভয়ংকর খারাপ লাগত।’
হাসতে হাসতে এলেনা জানালেন, তিনি একজন পাকা রাঁধুনি। আর, ককটেল বানানোর কাজটি না-কি রান্নার চেয়ে খুব আলাদা কিছু নয়।
‘আমার তো বিশ্বাসই হচ্ছে না যে, আমাদের সঙ্গে এমন কিছু ঘটছে। কিন্তু, উপায় কী, এটাই বাস্তবতা। কেউ তো আমাদের সঙ্গে কোনো বিষয়ে পরামর্শও করেনি’, যোগ করেন এলেনা।