প্রতিবাদ সমর্থনে ইরানে ইন্টারনেট নিষেধাজ্ঞা তুলে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
ইরানে সরকার বিরোধী গণবিক্ষোভকে সামনে রেখে দেশটির জনসাধারণের জন্য অবাধ তথ্য প্রবাহের সমর্থনে জো বাইডেন প্রশাসন সেখানে ইন্টারনেট সেবার ওপর আরোপ করা নিষেধাজ্ঞা শিথিল করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট শুক্রবার জানায়, বিক্ষোভ সমাবেশে বাধা দিতে ইরানি নাগরিকদের ইন্টারনেট ব্যবহার বন্ধ করে দেওয়ায় সরকারের তৎপরতা এবং দেশটির শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদী জনতার ওপর সরকারের আগ্রাসী দমনপীড়নের দৃশ্য বিশ্বের অন্যান্য দেশের মানুষকে না দেখতে দেওয়ার মতো কর্মকাণ্ডের জবাব হিসেবেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার এই সিদ্ধান্ত এসেছে। খবর আলজাজিরার।
এ বিষয়ে এক বিবৃতিতে মার্কিন ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টের ডেপুটি সেক্রেটারি ওয়ালি আদেইয়েমো বলেন, ‘পরিবর্তিত এই উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা ইরানের সাধারণ জনগণের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারির পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে প্রযুক্তির মাধ্যমে তাদের সাহায্য করছি।’
ইরানে চলতে থাকা বিক্ষোভের সূত্রপাত হয় গত সপ্তাহে ‘খাপছাড়া পোশাক’ পরার অভিযোগে পুলিশের হাতে আটক অবস্থায় মাশা আমিনি নামে এক নারীর মৃত্যুর মধ্য দিয়ে।
তবে ইরানি পুলিশ জানায় মাশা আমিনির মৃত্যু তাদের হেফাজতে থাকা অবস্থায় নির্যাতনের কারণে হয়নি, যদিও এই ঘটনা দেশজুড়ে তীব্র প্রতিবাদ ও বিক্ষোভে রূপ নেয় যা তেহরানের বিরুদ্ধে বিশ্ববাসীকে সরব করে তোলে।
এ সপ্তাহের শুরুর দিকে ইন্টারনেট ওয়াচডগ নেটব্লকস জানায় ইরানের পশ্চিমাঞ্চল ও রাজধানী তেহরানের কিছু অংশ ইন্টারনেট সেবা প্রায় বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপকে কঠোর নিয়ন্ত্রণের আওতায় আনা হয়।
এ প্রসঙ্গে শুক্রবার মার্কিন ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট আরও জানায়, মাশা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে মানুষের রাজপথে নেমে আসা ও ইরানি জনগণের জন্য তথ্যের অবাধ প্রবাহে সমর্থন যোগাতে যুক্তরাষ্ট্র তার তৎপরতা দ্বিগুনের বেশি বাড়াচ্ছে।
নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ফলে ইরানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ভিডিও কনফারেন্সিং ও ক্লাউড সার্ভিসের মতো বিষয়গুলো উন্মুক্ত হবে, তার পাশাপাশি সেন্সরশিপ এড়ানোর টুলস ও সফটওয়্যারের ব্যবহার বাড়াবে।
এদিকে, বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয় গত কয়েক বছরের মধ্যে তীব্র আকার ধারণ করা অব্যাহত বিক্ষোভে দেশটিতে এ পর্যন্ত ৩৫ ব্যক্তি মারা গেছে, যার মধ্যে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যও।