ফাইজারের টিকা অনুমোদনের সুপারিশ মার্কিন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের
ফাইজার-বায়োএনটেকের যৌথ উদ্যোগে তৈরি নভেল করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন জরুরি অনুমোদনের সুপারিশ করেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞেরা। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা ব্যবহারে ঝুঁকির তুলনায় উপকারিতার মাত্রা বেশি কি না, তা নির্ধারণ করতে আলোচনায় বসেছিল জন্য যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে (এফডিএ) পরামর্শ দানকারী ২৩-সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ দল। বৈঠক শেষে ভ্যাকসিন ব্যবহারের পক্ষে রায় দেয় দলটি।
ফাইজারের ভ্যাকসিনটি জনসাধারণের জন্য এরই মধ্যে অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাজ্য, কানাডা, বাহরাইন ও সৌদি আরব।
এদিকে বিশেষজ্ঞদের সবুজ সংকেত পাওয়ার পর ফাইজারের ভ্যাকসিনটি এখন এফডিএর ভ্যাকসিন বিষয়ক প্রধানের আনুষ্ঠানিক অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যেই সে অনুমোদন মিলবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এর আগে গত বুধবার মার্কিন স্বাস্থ্যমন্ত্রী অ্যালেক্স অ্যাজার বলেছিলেন, এফডিএর অনুমোদন পাওয়ার ‘কয়েকদিনের মধ্যেই আমরা ভ্যাকসিন হাতে পেয়ে যাব বলে আশা করছি। আর, ভ্যাকসিন পাওয়ার পর পরই সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের টিকাদান শুরু করা হবে’।
মার্কিন সরকারের টিকা সরবরাহ কর্মসূচি ‘অপারেশন র্যাপ স্পিড’-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অনুমোদন পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভ্যাকসিন সরবরাহ কার্যক্রম শুরু করা হবে।
চলতি ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম ধাপে ভ্যাকসিনের ৬৪ লাখ ডোজ সরবরাহের পরিকল্পনা করছে ফাইজার। প্রতিটি টিকার দুটি করে ডোজ প্রয়োজন হবে। সে হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম ধাপে ৩০ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়া সম্ভব হবে। যুক্তরাষ্ট্রের মোট জনসংখ্যা ৩৩ কোটি।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞেরা যুক্তরাষ্ট্রে এমন একটা সময়ে ফাইজারের ভ্যাকসিন প্রয়োগের সুপারিশ করলেন, যখন দেশটিতে করোনার থাবা নতুন করে আঘাত হানছে। নভেল করোনাভাইরাস মহামারি আকারে শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্রে গত বুধবার একদিনে কোভিড-১৯ রোগে রেকর্ড সংখ্যক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় ২৪ ঘণ্টায় তিন হাজার ৫৪ জন মারা গেছে। এর আগে গত ৭ মে যুক্তরাষ্ট্রে সর্বাধিক দুই হাজার ৭৬৯ জনের মৃত্যু হয়েছিল। কোভিড ট্র্যাকিং প্রজেক্টের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে মোট এক লাখের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে।
বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর হিসাবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে করোনায় দেড় কোটির বেশি মানুষ আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে এবং করোনায় মারা গেছে প্রায় তিন লাখ মানুষ।