বরিসের প্রতি অনাস্থা জানাতে একাট্টা দলীয় জ্যেষ্ঠ এমপিরা
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট আনতে একাট্টা হয়েছেন তাঁর নিজের দলেরই বেশ কয়েকজন এমপি। কোভিড বিধি ভেঙে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে একাধিক পার্টির খবর প্রকাশ্যে আসার পরিপ্রেক্ষিতে কনজারভেটিভ পার্টি বা টরি দলের জ্যেষ্ঠ এমপিদের এমন সিদ্ধান্ত।
যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, কনজারভেটিভ পার্টির জ্যেষ্ঠ এমপিরা (ব্যাকবেঞ্চার) বরিস জনসনের পাশে নেই। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে অনাস্থা জানিয়ে চিঠি পাঠাতে যাচ্ছেন তাঁরা। বরিসের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট আনতেই তাঁরা এমন পদক্ষেপ নিচ্ছেন। ব্রিটিশ পার্লামেন্টের যে সদস্য মন্ত্রিসভা বা বিরোধী দলের ছায়া মন্ত্রিসভার সদস্য নন, তাঁকে ব্যাকবেঞ্চার বলা হয়।
জ্যেষ্ঠ ব্যাকবেঞ্চারেরাই এমন এক সময়ে চিঠি পাঠানোর কথা বলছেন, যখন বরিস জনসনের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সন্নিকটে।
ব্রিটিশ আইন অনুসারে, ক্ষমতাসীন দলের অন্তত ১৫ শতাংশ এমপি যদি তাঁদের দলীয় নেতার (প্রধানমন্ত্রী) বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনেন, তা হলে তা পার্লামেন্টে আলোচনার জন্য গৃহীত হবে। তবে, কত জন এমপি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা এখনও জানা যায়নি।
১০ ডাউনিং স্ট্রিটের বিভিন্ন পার্টি নিয়ে তদন্ত করছেন শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তা সু গ্রে। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সে প্রসঙ্গে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এক সংবাদ সম্মেলন করে জানান, তদন্ত শেষ হলে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে। তবে, কবে সে তদন্ত শেষ হবে, সে বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি বরিস। শুধু বলেছেন, ‘কী গতিতে, কী পদ্ধতিতে তদন্ত চলছে তা আমরা জানি না। আমরা তদন্তে কোনোরকম হস্তক্ষেপ করছি না। তবে শুধু এটুকু আপনাদের আশ্বাস দিতে পারি—তদন্ত শেষ হলে যখন সু গ্রে প্রতিবেদন পেশ করবেন, আমি প্রতিবেদনটি আপনাদের সামনে তুলে ধরব।’
লেবার নেতা কের স্টায়মার বলেছেন, ‘গ্রে’র রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার অপেক্ষায় রয়েছি আমরা সবাই।’
নিয়ম অনুযায়ী, পার্লামেন্টের ৩৫৯ রক্ষণশীল এমপির মধ্যে ৫৪ জন বরিস জনসনের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে করে চিঠি লিখলে তাঁকে দলীয় প্রধান থাকা নিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে।
বলা হচ্ছে, বরিস জনসন শেষ পর্যন্ত পদত্যাগে বাধ্য হলে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পেতে পারেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস। এ ছাড়া চ্যান্সেলর ঋষি সুনাক, স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিতি প্যাটেল, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্টের নামও সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে সামনে আসছে।