বাইডেন ভুল বুঝলেও পরোয়া করি না : সৌদি যুবরাজ
সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান বলেছেন, তাঁর সম্পর্কে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কোনো ভুল বুঝেছেন কি-না সেটির পরোয়া করেন না তিনি। একই সঙ্গে বাইডেনের নিজের দেশের স্বার্থের ব্যাপারে মনোনিবেশ করা উচিত বলে মনে করেন সৌদি যুবরাজ।
বৃহস্পতিবার মার্কিন দৈনিক দ্য আটলান্টিককে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব মন্তব্য করেছেন মোহাম্মদ বিন সালমান। খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।
বাইডেন তাঁর (যুবরাজ) সম্পর্কে কিছু ভুল বুঝেছেন কি-না প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ বিন সালমান বলেন, ‘সাধারণভাবে, আমি কোনো পরোয়া করি না। আমেরিকার স্বার্থ নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করাটা বাইডেনের বিষয়।’
যুবরাজ আরও বলেন, ‘আমেরিকায় বক্তৃতা দেওয়ার অধিকার আমাদের নেই। একই বিষয় অন্যদের ক্ষেত্রেও।’
এমবিএস খ্যাত বিশ্বের শীর্ষ তেল রপ্তানিকারক মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটির ডি ফ্যাক্টো শাসক বিন সালমান জানিয়েছেন, রিয়াদ চাইলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ কমানোর পথ বেছে নিতে পারে।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সৌদি যুবরাজের দারুণ সম্পর্ক থাকলেও বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সময়ে রিয়াদ ও ওয়াশিংটনের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী কৌশলগত অংশীদারিত্ব কিছুটা চাপের মুখে পড়েছে।
সৌদিতে ভিন্নমতাবলম্বীদের ওপর ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং ২০১৫ সালের শুরু থেকে ইয়েমেনে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের আগ্রাসনের ঘটনায় সৌদি আরবের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে বাইডেন প্রশাসন।
এ ছাড়া ২০১৮ সালে সৌদি রাজপরিবারের সমালোচক এবং ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিক জামাল খাশোগির হত্যার ঘটনায় যুবরাজের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে বলে মার্কিন গোয়েন্দাদের এক প্রতিবেদনে উঠে আসে।
পরে রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দিতে দেশটির প্রতি চাপপ্রয়োগ করে ওয়াশিংটন। যদিও সৌদি যুবরাজ খাশোগি হত্যায় জড়িত থাকার মার্কিন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
বিন সালমান দ্য আটলান্টিককে জানান, তিনি মনে করেন, তাঁর বিরুদ্ধে খাশোগিকে নৃশংসভাবে হত্যার অভিযোগের মাধ্যমে তাঁর নিজের অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, সৌদি আরবের ইস্তাম্বুল কনস্যুলেটের ভিতরে খাশোগিকে হত্যা করা হয়।
সৌদি যুবরাজ বলেন, ‘আমি মনে করি, মানবাধিকার আইন আমার উপর প্রয়োগ করা হয়নি... মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণার ধারা-১১তে (Article XI of the Universal Declaration of Human Rights) বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি দোষী প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত তিনি নির্দোষ।’
যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান আরও বলেন, আমেরিকার সঙ্গে ‘দীর্ঘ ও ঐতিহাসিক’ সম্পর্ক বজায় রাখা এবং শক্তিশালী করাই রিয়াদের লক্ষ্য।
এ ছাড়া সৌদি শাসন সাংবিধানিক রাজতন্ত্রে রূপান্তরিত হতে পারে কি-না জানতে চাইলে এমবিএস বলেন, ‘না, সৌদি আরবের ভিত্তি বিশুদ্ধ রাজতন্ত্রের উপর।’