বিবিসির দিল্লি-মুম্বাই অফিসে ফের ভারতীয় আয়কর কর্মকর্তাদের তল্লাশি
দ্বিতীয় দিনের মতো ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং করপোরেশনের (বিবিসি) ভারতের দুই অফিসে ফের তল্লাশি চালিয়েছে দেশটির আয়কর কর্মকর্তারা। গতকালের মতো আজও (বুধবার) দিল্লি ও মুম্বাই অফিসে হানা দিয়েছে তারা। দুটি সূত্রের বরাতে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স।
ভারত সরকারের এক সূত্র রয়টার্সকে বলেন, ‘মঙ্গলবার গভীর রাত পর্যন্ত অফিস দুটিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। আজ সকালে ফের তল্লাশি অভিযান শুরু করেন কর কর্মকর্তারা।’
কি কারণে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যমটি অফিসে তল্লাশি চালানো হচ্ছে, এ নিয়ে এখনও কোনো মন্তব্য করেনি দেশটির আয়কর বিভাগ। এমনকি তল্লাশির কারণ সম্পর্কেও কোনো কিছু জানায়নি সূত্র। তাদের মতে, ইস্যুটি সংবেদনশীল।
কয়েক সপ্তাহ আগে ২০০২ সালের গুজরাটের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা নিয়ে একটি তথ্যচিত্র প্রকাশ করে বিবিসি। কীভাবে ২০০২ সালে গুজরাটের দাঙ্গাকে ব্যবহার করে ওই রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০১৪ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হলেন তা বিবিসির তথ্যচিত্রটিতে দেখানো হয়েছে। ওই দাঙ্গায় এক হাজার মানুষ মারা যায়, এর মধ্যে বেশিরভাগই মুসলিম ধর্মালম্বী।
বিবিসির তথ্যচিত্রকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এমনকি দেশটিতে তথ্যচিত্রটির সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফেসবুক ও ইউটিউবকে তথ্যচিত্রটি সরানোর নির্দেশ দেয় মোদি সরকার।
ভারত সরকার বলছে, ‘বিবিসির ‘ইন্ডিয়া : দ্য মোদি কোশ্চেন’ তথ্যচিত্রটি পক্ষপাতদুষ্ট। এতে বস্তুনিষ্ঠতার অভাব ও ঔপনিবেশিক মানসিকতা দেখানো হয়েছে।’ তবে, তথ্যচিত্রটি নিয়ে নিজেদের অবস্থানে অটল রয়েছে বিবিসি। বিষয়টি নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বিবিসি জানায়, কর কর্মকর্তাদের সম্পূর্ণ সহযোগিতা করা হচ্ছে। আমাদের আশা, দ্রুত সময়ের মধ্যেই এই সমস্যার সমাধান হবে।’
এদিকে, তল্লাশি অভিযানের নিন্দা জানিয়েছে ভারতের স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো। এক বিবৃতিতে দ্য মুম্বাই প্রেস ক্লাব কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আমাদের দাবি, এই ভয়ভীতি দেখানো বন্ধ করা হোক। সাংবাদিকদের ভয় বা পক্ষপাত ছাড়াই তাদের কাজ করতে দেওয়া হোক।
মোদি সরকারের এই পদক্ষেপকে গুণ্ডামি বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস সংবাদপত্রের সম্পাদকীয় পাতায়।
রয়টার্স বলছে, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ইনডেক্সে পিছিয়ে যাচ্ছে ভারত। গত বছর আট ধাপ পিছিয়ে তারা পৌঁছায় ১৫০তম স্থানে।