বিবিসির দিল্লি-মুম্বাই অফিসে ভারতীয় আয়কর কর্মকর্তাদের হানা
ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং করপোরেশনের (বিবিসি) ভারতের দুই অফিসে তল্লাশি চালিয়েছে দেশটির আয়কর কর্মকর্তারা। আজ মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানী নয়াদিল্লি ও মুম্বাইয়ের অফিসে এই তল্লাশি চালানো হয়। দেশটির কর্তৃপক্ষের তদন্তের অংশ হিসেবে এমনটি করা হয়েছে বলে দাবি সংবাদ মাধ্যমটির। খবর রয়টার্সের।
কয়েক সপ্তাহ আগে ২০০২ সালের গুজরাটের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা নিয়ে একটি তথ্যচিত্র প্রকাশ করে বিবিসি। দাঙ্গায় ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। এরপরেই দেশটির সরকার বিবিসির প্রতি কঠোর হয়েছে বলে অভিযোগ ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যমটির।
এক বিবৃতিতে বিবিসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বর্তমানে আমাদের দিল্লি ও মুম্বাই অফিসে কর কর্মকর্তারা রয়েছেন। তাদেরকে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করা হচ্ছে। আমাদের আশা, দ্রুত সময়ের মধ্যেই এই সমস্যার সমাধান হবে।
এ বিষয়ে জানতে ভারতে আয়কর বিভাগে রয়টার্স মেইল পাঠালেও তারা কোনো মন্তব্য করেনি।
বিবিসির দিল্লির অফিসের এক সূত্র রয়টার্সকে বলেছে, কর কর্মকর্তারা অ্যাকাউন্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলছেন। এমনকি কাউকে অফিস থেকে বের হতে বারণ করেছে।
এই তল্লাশি অভিযান চালানোর সময় বিবিসির দিল্লির অফিসের বাইরে সাংবাদিকরা জড়ো হয়েছেন।
ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যমটির অফিসে অভিযান চালানোয় এর নিন্দা করেছে ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস। ভারতের সবচেয়ে পুরোনো দলটির জেনারেল সেক্রেটারি ও আইনপ্রণেতা কে.সি ভেনুগোপাল এক টুইট বার্তায় বলেন, ‘বিবিসি অফিসে আয়কর বিভাগের হানা হতাশাজনক। মোদি সরকার সমালোচনায় ভয় পাচ্ছে, তারই বহিঃপ্রকাশ এটি। মোদি সরকার সমালোচনাকারীদের ভয়ভীতি দেখাতে চাইছে। আমরা তাদের এই কৌশলের কঠোর ভাষায় নিন্দা জানাই। এই অগণতান্ত্রিক ও স্বৈরাচারী মনোভাব আর চলতে পারে না।’
অন্যদিকে, ক্ষমতাসীন দল বিজেপি থেকে বলা হয়, ভারতীয় প্রতিষ্ঠানগুলো স্বাধীনভাবে কাজ করে এবং আয়কর বিভাগের অভিযান আইনের মধ্যে রয়েছে।
রয়টার্স বলছে, কীভাবে ২০০২ সালে গুজরাটের দাঙ্গাকে ব্যবহার করে ওই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০১৪ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হলেন তা বিবিসির তথ্যচিত্রটিতে দেখানো হয়েছে। এটিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এমনকি দেশটিতে তথ্যচিত্রটির সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফেসবুক ও ইউটিউবকে তথ্যচিত্রটি সরানোর নির্দেশ দেয় মোদি সরকার।