ব্রেকআপের কিশোর-কিশোরী সামলাতে নিউজিল্যান্ডে ৪০ লাখ ডলার প্যাকেজ
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সম্পর্কের জোয়ার-ভাটা থাকবে, এটি চিরায়িত। এই টানাপোড়নে অনেক সম্পর্ক টিকে যায়, আবার বিচ্ছেদের সংখ্যা কম নয়। বর্তমান সময়ে কিশোর-কিশোরী খুব সহজেই সম্পর্কে যায়, একইসঙ্গে খুব দ্রুত করে ব্রেকআপও। তবে, ব্রেকআপের পর অনেকেই ঠিক থাকতে পারে না। ব্রেকআপ হওয়া সঙ্গী বা সম্পর্কের প্রতি নেতিবাচক ধারণা পোষণ করে তারা। অনেকে আবার নিজের বা সাবেক সঙ্গীর ক্ষতিও করে ফেলেন। এই সমস্যা থেকে উত্তোরণে নতুন এক ক্যাম্পেইন চালু করছে নিউজিল্যান্ড। আজ শুক্রবার (২৪ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইস।
ভারতীয় গণমাধ্যমটি জানিয়েছে, ‘লাভ বেটার’ নামে নতুন এক ক্যাম্পেইন চালু করছে নিউজিল্যান্ড। ব্রেকআপের পর কিশোর-কিশোরী যেন কোনো খারাপ দিকে পা না বাড়িয়ে সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনযাপন এবং সম্পর্ক নিয়ে পজিটিভ মানসিকতায় থাকে সে জন্যই এই ক্যাম্পেইন চালু করেছে তারা। তিন বছরের এই ক্যাম্পিংয়ে পরিচালনা করবে নিউজিল্যান্ডের সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয়। এই ক্যাম্পিংয়ের ব্যয় ধরা হয়েছে ৪০ লাখ মার্কিন ডলার।
এক বিবৃতিতে নিউজিল্যান্ড সরকার জানায়, ‘এই উদ্যোগটি কিশোর-কিশোরীদের গঠনমূলক অভিজ্ঞতার দিকে নিয়ে যাবে। ভবিষ্যতের জন্য সহায়তা করবে।’
এই ক্যাম্পিংয়ের বিষয়টি নিয়ে সবার প্রথমে কথা বলেন সামাজিক উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান বিষয়ক উপমন্ত্রী প্রিয়াঙ্কা রাধাকৃষ্ণ। এই নারী বলেন, ‘এক হাজার ২০০ এর বেশি কিউই কিশোর-কিশোরী প্রথম ব্রেকআপের পর আমাদের কাছে সহায়তা চেয়েছেন। ব্রেকআপকে আমরা একটি সাধারণ চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি।’
এর আগে গত বুধবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে প্রিয়াঙ্কা রাধাকৃষ্ণ লেখেন, “ভালোবাসা মানুষকে পাওয়া ও সেসব মানুষদের থেকে প্রাপ্ত আঘাত থেকে রক্ষার জন্য আমাদের সমর্থন দরকার বলে জানিয়েছে কিশোর-কিশোরীরা। কীভাবে সঙ্গীর সঙ্গে বোঝাপড়ার মাধ্যমে ব্রেকআপ করা যায় তা জানতেও আগ্রহ রয়েছে তাদের। আজ থেকে আমরা বিশ্ব নেতৃস্থানীয় একটি ক্যাম্পেইন চালু করছি, ‘লাভবেটার’ যা আমাদের সহায়তা করবে।”
প্রিয়াঙ্কা রাধাকৃষ্ণ আরও লেখেন, ‘ব্রেকআপ কষ্টদায়ক। তবে, এটি চিরচায়িত। আমরা কিশোর বয়সীদের জানাতে চাই, নিজের বা অন্যের ক্ষতি না করেও ব্রেকআপ করা যায়।’
এই ক্যাম্পেইনের লক্ষ্য হল, তরুণদের তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে উৎসাহিত করা। এতে তাদের সমবয়সীরা, যারা একই ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে পারে, তারা সাহায্য পাবে।
নিউজিল্যান্ডে পারিবারিক এবং যৌন সহিংসতার পরিমাণ অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি। দেশটির সরকারি তথ্য মতে, ৮৭ শতাংশ কিউই কিশোর-কিশোরী ও তরুণ-তরুণী, যাদের বয়স ১৬ থেকে ২৪ বছরের মধ্যে, তারা সাধারণ ব্রেকআপ করে কোনো না কোনো ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।
এই ক্যাম্পেইনকে স্বাগত জানিয়েছে নিউজিল্যান্ডের পারিবারিক ও যৌন সহিংসতা প্রতিরোধের মন্ত্রী মারামা ডেভিডসন।