ভারতের কোভ্যাক্সিন টিকার ছাড়পত্র আটকে দিল যুক্তরাষ্ট্র
ভারত বায়োটেক সংস্থার কোভিড টিকা কোভ্যাক্সিন ব্যবহারের ছাড়পত্র আটকে দিল যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)।
মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের তৃতীয় পর্বের সম্পূর্ণ ফল জমা দিতে না পারায় যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবহারের অনুমোদন পায়নি কোভ্যাক্সিন। সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুস্তান টাইমস এ খবর জানিয়েছে।
কোভ্যাক্সিন এফডিএ’র ছাড়পত্র না পাওয়ায় এই টিকা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া ভারতীয়দের নতুন করে প্রতিষেধক নিতে হতে পারে সে দেশে। তবে ভারত সরকারের দাবি, কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই কোভ্যাক্সিন প্রতিষেধকের তৃতীয় দফার ফল প্রকাশ হবে। যার ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রে ছাড়পত্রও পেয়ে যাবে এই টিকা।
সূত্রের খবর, মার্চ মাস পর্যন্ত পরীক্ষার ফল জমা দিয়েছিল ভারত বায়োটেক। কিন্তু মে মাসে এফডিএ নতুন নিয়ম চালু করেছে। তাতে বলা হয়েছে, এখন থেকে মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের অন্তত তৃতীয় দফার গবেষণার সম্পূর্ণ ফলাফল জমা দিলেই কেবল কোনো টিকাকে ছাড়পত্র দেওয়া হবে ।
কোভ্যাক্সিন উৎপাদনকারী সংস্থা ভারত বায়োটেক জানাচ্ছে, জুলাইয়ের শুরুর দিকে সম্পূর্ণ ফল তাদের হাতে এসে যাবে। তার ভিত্তিতে পুনরায় আবেদন করা হবে। যুক্তরাষ্ট্রে কোভ্যাক্সিন উৎপাদন ও বণ্টনের জন্য ভারত বায়োটেকের সঙ্গে চুক্তি করেছে অকুজেন নামের একটি সংস্থা। ওই সংস্থার মাধ্যমেই যুক্তরাষ্ট্রে জরুরি ভিত্তিতে তাদের টিকা ব্যবহারের ছাড়পত্র চেয়েছিল ভারত বায়োটেক। সে আবেদন খারিজ করে এফডিএ জানিয়েছে, পরীক্ষামূলক প্রয়োগের যে তথ্য জমা দেওয়া হয়েছে, তা অসম্পূর্ণ ও আংশিক। আরও বেশকিছু রিপোর্ট জমা পড়লে এবং ফলাফল ইতিবাচক হলে বায়োলজিক্স লাইসেন্স অ্যাপ্লিকেশন (বিএলএ) বা সে দেশে প্রতিষেধক ব্যবহারের সম্পূর্ণ ছাড়পত্র দেওয়া হবে।
অকুজেন বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, আগামী দিনে কোভ্যাক্সিনের তৃতীয় দফার পরীক্ষার ফলাফল এফডিএ’র কাছে জমা দিয়ে সম্পূর্ণ ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করা হবে। এতে কিছু বাড়তি সময় লাগলেও, যুক্তরাষ্ট্রে কোভ্যাক্সিন প্রতিষেধক আনতে সংস্থাটি বদ্ধপরিকর।
ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে নীতি আয়োগের সদস্য বিনোদ পল বলেন, ‘নির্দিষ্ট বৈজ্ঞানিক কাঠামো বা নির্দেশাবলি মেনে ছাড়পত্র দেওয়া হলেও প্রতিটি দেশের কিছু আলাদা আলাদা শর্ত থাকে। কোভ্যাক্সিনের তৃতীয় দফার ফলাফল কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সামনে আসতে চলেছে। আশা করি, তার ভিত্তিতে আবেদন জানালে ছাড়পত্রের সমস্যা হবে না।’ ভারতে টিকাকরণ কর্মসূচিতে এর প্রভাব পড়ার কোনো কারণ নেই বলে জানান তিনি।
মানবদেহে তৃতীয় দফার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ সংক্রান্ত গবেষণার ফলাফল জমা দিতে না পারায় এখনও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোভ্যাক্সিনকে ছাড়পত্র দেয়নি। যে কারণে ভারত থেকে কোভ্যাক্সিন প্রতিষেধক নিয়ে সৌদি আরব, যুক্তরাষ্ট্র বা যুক্তরাজ্যের মতো দেশগুলোতে গেলে ভারতীয়দের নতুন করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা স্বীকৃত টিকা নিতে বলা হচ্ছে। জুলাইয়ে তৃতীয় দফার ফল হাতে আসার পরে এ নিয়ে অস্বস্তি কেটে যাবে বলে মনে করছে ভারত বায়োটেক।